মঙ্গলবার , ১৫ নভেম্বর ২০২২ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

ম্যাজিস্ট্রেটকে পিপির হুমকি বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্ক: হাইকোর্ট

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
নভেম্বর ১৫, ২০২২ ২:০৯ অপরাহ্ণ

পিরোজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে হুমকি ও তার সঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিনের অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনা বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্ক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এসময় আদালত প্রশ্ন তুলে বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে কী মেসেজ যাবে?

আদালতের তলবাদেশে হাজির হয়ে পিপির নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার পর শুনানিতে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতে পিপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি, অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু ও অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন।

শুনানিকালে আদালত পিপির উদ্দেশে বলেন, আপনি কোনো সাধারণ আইনজীবী নন। আপনি পিরোজপুরের পিপি, আইনজীবী নেতা। আপনারা যদি বিচারককে, আদালতকে সম্মান না করেন তাহলে তো সাধারণ মানুষ সম্মান করবে না। আর যদি আদালতের প্রতি, বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা উঠে যায়, তাহলে তো কেউ বাঁচবেন না। আমরা যদি আপনার আচরণ অনুমোদন করি, তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কী মেসেজ যাবে?

‘বিচারকের সঙ্গে আপনার এই আচরণের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তার খেসারত দিতে হবে। আপনার আচরণের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বিচার বিভাগের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আপনারও তো অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এটা তো আপনার জীবনের বড় দুর্ঘটনা। একজন বিচারকের সঙ্গে পিপি যে আচরণ করেছেন তা রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্ক। বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্ক। এ ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।’

আদালত আরও বলেন, আদালত শক্তি প্রদর্শনের জায়গা নয়। এখানে যত বিনয়ী হবেন তত বড় হতে পারবেন। এখন যদি আপনাকে আমরা ছয় মাসের জন্য আইন পেশা থেকে বিরত থাকার আদেশ দেই তখন আপনার কী হবে?

পরে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, আমরা তার পক্ষ হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। তখন আদালত পিপিকে এজলাসের ডায়াসের সামনে ডাকেন। এসময় পিপি আদালতকে বলেন, আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে আর এই ধরনের আচরণ করবো না। এরপরে আদালত তাকে সতর্ক করে ক্ষমা করে দেন।

এর আগে এক মামলায় এহসান রিয়াল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের উপদেষ্টা মো. হাফিজুর রহমান ছিদ্দীকের জামিন শুনানিকালে পিপির বিরুদ্ধে এজলাসে স্বাভাবিক বিচারকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর জানান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মো. নোমান।

এরপর রেজিস্ট্রার জেনারেল বিষয়টি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বরাবরে উপস্থাপন করেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে শুনানির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন কোর্টে পাঠাতে নির্দেশ দেন। সে অনুসারে বিষয়টি শুনানির জন্য উঠে।

গত ১৭ অক্টোবর শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার রুলসহ খান মো. আলাউদ্দিনকে তলব করে আদেশ দেন। ১৫ নভেম্বর তাকে হাইকোর্টে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

সে অনুসারে পিপি হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। এরপর হাইকোর্ট তাকে আদালত অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে রুল নিষ্পত্তি করেন।

সর্বশেষ - সারাদেশ