বগুড়া, টাঙ্গাইল, লালমনিরহাট ও ঠাকুরগাঁও জেলার অবৈধ ইটভাটা সাতদিনের মধ্যে বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। বন্ধ করার দুই সপ্তাহের মধ্যে এসব জেলার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।
ওই আদেশর বিরুদ্ধে ইটভাটা মালিকদের পক্ষ থেকে আপিল আবেদন করা হয়। ওই আপিলের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ।
আবেদনের শুনানিতে ঠাকুরগাঁও, বগুড়া ও লালমনির হাট জেলার ৮৯টি ইটভাটা বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিষয়ে স্থগিতাদেশ না দিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে করা মালিকদের পক্ষের আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (৪ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ ৮৯ ইট ভাটার মালিকের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা। আর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের রিটের পক্ষে ছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
তারা আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
এর আগে গত গত ৭ নভেম্বর এ বিষয়ে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
ওইদিন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুসারে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করা যাবে না- এমন বিধান থাকলেও শীত মৌসুমকে সামনে রেখে কয়েকটি জেলায় অবৈধ ইটভাটা কার্যক্রম শুরু করছে মর্মে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই সব প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ৬ নভেম্বর একটি রিট করা হয়।
রিটের শুনানি নিয়ে এসব জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ এর ৪, ৮, ১৪, ও ১৮ ধারা অনুসারে অবৈধ ইট ভাটা স্থাপন ও পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ২৪ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ওইদিন আরও বলেন, আইনে লাইসেন্স ছাড়া ইটভটা চালানো নিষিদ্ধ হলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে এসব জেলায় অনেক ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়াই চলছে। এভাবে অবৈধ ইটভাটা চালিয়ে অসাধু ব্যক্তিরা লক্ষ-কোটি টাকা মুনাফা করছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। অথচ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ইটভাটা এমনিতেই পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। আর অবৈধ হলে তো কথাই নেই। যেসব মানদণ্ড রক্ষা করে একটি বৈধ ইটভাটা স্থাপন করতে হয়, নিশ্চিতভাবেই লাইসেন্স ছাড়া এসব ইটভাটা সেসব মানদণ্ড মানছে না। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করেন এ আইনজীবী।