প্রায় ১৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। তবে সম্মেলন হলেও নেতৃত্বে পুরোনোরাই থাকতে পারেন বলে জানা গেছে।
অর্থাৎ সভাপতি পদ থাকছে মোসলেম উদ্দিন আহমদ এমপির হাতে, আর সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। এমনটি আভাস দিয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। যদিও এখনপর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলেননি। তবে সম্মেলন পরবর্তী দলের ত্যাগী, নির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতাদের পদে রাখা হবে বলে জানা গেছে।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম মহানগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়ামের সামনের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সম্মেলন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বর্ষীয়ান নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সম্মেলন উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনসহ অন্যান্যরা।
তবে ওবায়দুল কাদের উপস্থিত থাকতে না পারলে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকতে পারেন তথ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। দ্বিতীয় পর্ব কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে জিমনেশিয়াম হলে। কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোট কিংবা কেন্দ্রীয় উপস্থিতিতে সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।
জানা গেছে, সম্মেলন করার জন্য কেন্দ্রীয় ঘোষণার পর থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা পদ প্রত্যাশী হলেও শেষ পর্যন্ত মোসলেম উদ্দিন এবং মফিজুর রহমানকে পুনরায় দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রের গ্রিন সিগন্যাল থাকায় এই পদে পদ প্রত্যাশীদের আগ্রহে ভাটা পড়ে। তবে যারা সভাপতি হতে চেয়েছেন তাদের সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশীদের সম্পাদকীয় দায়িত্বে রাখা হতে পারে।
এদিকে সম্মেলন ঘিরে পদপ্রত্যাশীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। অনেকে নিজ নিজ নেতার পক্ষে দক্ষিণ জেলাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন সাঁটাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। সম্মেলনের সভানেত্রী ওয়াকিবহাল। ধারণা করা হচ্ছে, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বহাল রেখে অন্যান্য সম্পাদকীয় পদে নতুন মুখ আসতে পারে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, অনেকদিন পর সম্মেলন হচ্ছে। এজন্য নেতাকর্মীরা উদগ্রীব। তবে আমাদের মূল সিদ্ধান্ত দেবেন সভানেত্রী। তিনি যাদের নেতৃত্বে চাইবেন, তারাই দায়িত্ব নেবেন। আমরা সবাই সংগঠনের নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখবো। তবে কারা নেতৃত্বে আসছেন সেটি আমি অবগত নই।
সবশেষ ২০০৫ সালের ২৩ জুলাই দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল। ওই সম্মেলনে প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুকে সভাপতি এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মৃত্যুর পরের বছর কেন্দ্র থেকে সমঝোতার ভিত্তিতে মোসলেম উদ্দিন আহমদকে সভাপতি ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।