জার্মানির রাজধানী বার্লিনে রেডিসন ব্লু হোটেলের লবিতে ১০ লাখ লিটার পানি ধারণকারী একটি বিশাল অ্যাকোয়ারিয়াম ফেটে গেছে। এতে হোটেল এবং আশপাশের রাস্তায় পানি ছড়িয়ে পড়ে সেখানকার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙা কাচের টুকরাতে দুজন আহত হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে।
৪৬ ফুট উচ্চতার অ্যাকোয়াডম নামের অ্যাকোয়ারিয়ামটিতে দেড় হাজার বিদেশি মাছের আবাস ছিল। ২০০৩ সালে এটি চালু করার পর বিশ্বের বৃহত্তম নলাকার অ্যাকোয়ারিয়াম হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তোলে। অ্যাকোয়াডম নির্মাণের সময়কার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এটি নির্মাণে প্রায় এক কোটি ২৮ লাখ ইউরো খরচ হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় ‘অবিশ্বাস্য সামুদ্রিক ক্ষতি’ হয়েছে এবং কাচের টুকরাতে দুজন আহত হয়েছে। হোটেলের আশপাশের রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে পানি প্রবাহিত হওয়ায় মানুষকে সাবধানে গাড়ি চালাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়াও শহরের গণপরিবহন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হোটেলের বাইরের রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে পানি জমে থাকায় সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ওই এলাকায় বর্তমানে ট্রাম পরিষেবাও বন্ধ রয়েছে।
ঘটনার পর হোটেলের অতিথিদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়া এ ঘটনার ছবিগুলোতে হোটেলের হলঘরে বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে।
বার্লিনের ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শতাধিক অগ্নিনির্বাপক কর্মী ছুটে যান। ঠিক কী কারণে অ্যাকোয়ারিয়ামটি ভেঙেছে তা স্পষ্ট নয়। তারা হোটেলের ভেতরে সম্ভাব্য আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে উদ্ধারকারী কুকুর ব্যবহার করেছিল। কিন্তু এতে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া কোনো হামলার ফলে ঘটনাটি ঘটেছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই বলে পুলিশের একটি সূত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।
বার্লিনের মেয়র ফ্রানজিস্কা গিফি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি এ ঘটনাকে সুনামির সঙ্গে তুলনা করেছেন। তবে ঘটনাটি অনেক সকালে ঘটায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। দিনের ব্যস্ত সময়ে এ দুর্ঘটনা ঘটলে হতাহতের আশঙ্কা থাকত।
প্রসঙ্গত, অ্যাকোয়ারিয়ামটি দুই বছর আগে আধুনিক করা হয়েছিল। দর্শনার্থীদের ব্যবহারের জন্য এর ভেতরে পরিষ্কার দেয়ালসহ একটি লিফট রয়েছে। এ ছাড়া হোটেলের কিছু কক্ষ থেকে অ্যাকোয়ারিয়ামের দৃশ্য উপভোগ করা যায় বলে হোটেলের বিজ্ঞাপনে প্রচার করা হয়।
সূত্র : বিবিসি