এদিকে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীর গোলা হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন।
সান্ধ্য ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, আরও কয়েকটি বড় ধরনের হামলা চালানোর পর্যাপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার কাছে আছে। কিয়েভকে আরও বেশি ও উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহে আবারও পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ইউক্রেন যথেষ্ট শক্তিশালী। তিনি বলেন, ‘মস্কোর রকেট–ভক্তরা যতই এতে ভরসা রাখুক না কেন, এটা এই যুদ্ধে শক্তির ভারসাম্যে কোনো পরিবর্তন আনবে না।’
গত বৃহস্পতিবার কিয়েভ সতর্ক করে বলেছে, আগামী বছর নতুন করে সর্বাত্মক হামলার পরিকল্পনা করছে মস্কো। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। চলমান এই যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা হামলায় ইউক্রেনের বিশাল এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে এসব এলাকার সামান্যই রুশ বাহিনী দখল করতে পেরেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ইউক্রেনকে যে সুবিধা দেবে

যুদ্ধক্ষেত্রের কয়েকটি ফ্রন্টে হেরে যাওয়ার পর অক্টোবরের শুরু থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। তবে আগের অনেক হামলার চেয়ে শুক্রবারের হামলায় বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কিছুটা মেরামতের পর বিদ্যুতের জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নেয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনার্গো। হামলার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল তারা। ইউক্রেনার্গো সতর্ক করে বলেছে, আগের হামলাগুলোর চেয়ে এবার স্থাপনা মেরামত ও বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি সচল করতে বেশি সময় লাগবে।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বলেছে, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফাঁকি দিতে ইউক্রেনের খুব কাছ থেকেই যুদ্ধবিমান উড়িয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেনের সেনাপ্রধান বলেছেন, ৭৬টির মধ্যে ৬০টি ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করা হয়েছে।
অবশ্য জ্বালানিমন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো বলেছেন, কমপক্ষে নয়টি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।

ইউক্রেনে মার্কিন প্যাট্রিয়ট–ব্যবস্থা রুশ হামলার বৈধ লক্ষ্যবস্তু হবে: ক্রেমলিন

শুক্রবারের হামলাকে রাশিয়ার সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র হামলাগুলোর একটি বলে মন্তব্য করেছেন কিয়েভের সামরিক মুখপাত্র মিখাইলো শামানভ। তিনি বলেন, কিয়েভ অঞ্চলে ছোড়া ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৩৭টিই ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন।
এদিকে পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনের গোলা হামলায় দুটি এলাকায় বেসামরিক লোকজন নিহত হয়েছেন বলে রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
লুহানস্কের রাশিয়া সীমান্তবর্তী লানত্রাতিভকা গ্রামে ১১ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২০ জন। জরুরি পরিষেবা বিভাগের বরাত দিয়ে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস এ তথ্য দিয়েছে।
এ অঞ্চলে রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া গভর্নর লিওনিড পাসেচনিক এ হামলাকে ‘বর্বর’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে রয়টার্স হতাহতের সংখ্যা যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।