ভারত জোড়ো যাত্রাসঙ্গীরা হরিয়ানায়ও ঝুঁকির মধ্যে পথ চলেছেন বলে বেনুগোপাল জানিয়েছেন। হরিয়ানায় বিজেপি সরকারের অন্যতম শরিক দল। সেই রাজ্যে নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে গুরুগ্রাম পুলিশের কাছে কংগ্রেস এক অভিযোগ জানিয়েছিল। চিঠির সঙ্গে বেনুগোপাল সেটিও জুড়ে দেন। অভিযোগে বলা হয়েছিল, অচেনা বহু মানুষ ও রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা যাত্রীদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত কনটেইনারগুলোতে ঢুকেছেন। কাউকে কিছু জানানো বা অনুমতি গ্রহণের প্রয়োজন পর্যন্ত তাঁরা মনে করেননি।
কংগ্রেস ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দল এ যাত্রায় অংশ নিচ্ছে। অভিযোগ জানিয়েছে তারাও। বলেছে, গোয়েন্দারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। নানা কথা জানতে চাইছেন। জিজ্ঞাসা করছেন, কেন তাঁরা যাত্রায় অংশ নিচ্ছেন। বেনুগোপাল চিঠিতে লিখেছেন, দেশে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষা এ পদযাত্রার উদ্দেশ্য। সরকারের উচিত প্রতিহিংসাপরায়ণ না হওয়া। সব যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের কর্তব্য, বিশেষ করে যাত্রীরা যখন পাঞ্জাব হয়ে জম্মু-কাশ্মীরে যাবেন এবং শ্রীনগরে যাত্রা শেষ করবেন।
কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ভারত জোড়ো যাত্রা বন্ধ করে দেওয়ার এক চক্রান্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ ও মিডিয়াকে সে জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু তারা ব্যর্থ হবে। তিনি বলেন, কোভিডের দোহাই দিয়ে জাতীয় স্বার্থে যাত্রা বন্ধের যে অনুরোধ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয় কদিন আগে করেছেন, তা এ চক্রান্তেরই এক অঙ্গ।
বর্ষ শেষের বিরতির পর আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে ভারত জোড়ো যাত্রার শেষ পর্ব শুরু হবে। এ পর্বে রাহুলসহ যাত্রীরা হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ হয়ে পাঞ্জাবে ঢুকবেন, তারপর জম্মু হয়ে শ্রীনগর। শ্রীনগরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে যাত্রা। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে এ যাত্রা শেষ হওয়ার কথা।
উত্তর প্রদেশে যাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য কংগ্রেস আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, রাষ্ট্রীয় লোকদলের নেতা জয়ন্ত চৌধুরী ও বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতীকে। শোনা যাচ্ছে, তিন নেতাই যাত্রায় অংশ নিতে অনাগ্রহী। তাঁরা সরাসরি অংশ না নিয়ে কিছুটা দূরত্ব রক্ষা করে চলতে চাইছেন। মায়াবতী অনেক দিন ধরেই বিজেপির দিকে ঝুঁকে। অখিলেশ ও জয়ন্ত নিজেরা না এলেও কাউকে পাঠাতে পারেন। তাঁরা প্রকাশ্যে বলেছেন, যাত্রার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাঁরা সহমত। যাত্রার প্রয়োজনীয়তাও তাঁরা স্বীকার করেন। তবে এ যাত্রাকে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার আন্দোলন হিসেবে তাঁরা দেখতে চান না। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ যদিও বলেছেন, এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি। তৃণমূল কংগ্রেসও সরাসরি যাত্রায় অংশ নিচ্ছে না।
তবে কাশ্মীরের অধিকাংশ দল এ যাত্রার শরিক হবে। তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাহ ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি যাত্রাসঙ্গী হবেন বলে জানিয়েছেন। কেরালায় রাজ্য রাজনীতির কারণে সিপিএম অংশ না নিলেও জম্মু-কাশ্মীরের সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামি যাত্রায় থাকবেন। কংগ্রেস জানিয়েছে, গুলাম নবি আজাদের দল ছেড়ে বেশ কয়েক সাবেক কংগ্রেস নেতাও যোগ দেবেন। রাহুল গান্ধীর ‘অদম্য সাহসকে’ মেহবুবা মুফতি কুর্নিশ জানিয়েছেন।