এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর হুকুম অনুযায়ী। এনডিএমএর চিঠিতে সেই ইঙ্গিত দিয়ে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
স্পষ্টতই, জোশিমঠ ও সংলগ্ন অঞ্চলের ভূমিধস সরকারকে বিব্রত ও বিড়ম্বিত করছে। তাই এই নিষেধাজ্ঞা। ভূমিধসের কারণ হিসেবে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বেহিসাবি উন্নয়ন প্রকল্পকে পরিবেশবিশেষজ্ঞরা দায়ী করে চলেছেন।

ইসরোর উপগ্রহ চিত্রে জোশিমঠের ক্রমশ দেবে যাওয়ার ছবি স্পষ্ট। উপগ্রহ চিত্র ও সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেখাচ্ছে, ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারির মধ্যে জোশিমঠ বসে গেছে ৫ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার। ২ জানুয়ারি সেখানে বড় মাপের একটি ভূমিধস ঘটে যায়। ইসরোর বিজ্ঞানীদের মতে, গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জোশিমঠ একটু একটু করে দেবে যেতে শুরু করেছে।
ইসরোর এই প্রতিবেদন ও উপগ্রহের ছবি জনসমক্ষে চলে আসায় কেন্দ্রীয় সরকার নড়েচড়ে বসে। হিমালয়ে এই বিপর্যয়ের জন্য পরিবেশবিদেরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও চার ধাম রাস্তা চওড়া এবং লাগামছাড়া নগরায়ণকে দোষী ঠাওরাচ্ছেন। কারণ, এসব করতে গিয়ে পাহাড় ও তার অভ্যন্তরে ক্রমাগত বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে, অগণিত গাছ কাটা হচ্ছে। পরিবেশবিদেরা ছাড়াও জোশিমঠের বাসিন্দারা দায়ী করছেন তপোবন–বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজকে। কেন্দ্রীয় সরকার এ কারণে বিব্রতবোধ করছে। যদিও এই প্রকল্পের নির্মাতা কেন্দ্রীয় সংস্থা এনটিপিসি দায়ভার নিতে অস্বীকার করেছে। বিজেপিশাসিত উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি অবশ্য বলেছেন, এ বিপর্যয়ের জন্য এনটিপিসি দায়ী কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
জনমত বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে দেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এনডিএমএর এই চিঠি। তাতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এ বিপর্যয় নিয়ে বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছে। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছে। পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজেদের ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এতে শুধু জোশিমঠের বাসিন্দারাই নন, সারা দেশে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, জোশিমঠের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য সরকার এক বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেছে। সেই প্রতিবেদন পেশ হওয়ার আগে ইসরোসহ কোনো সরকারি সংস্থা যেন মিডিয়ার সঙ্গে কথা না বলে।
জোশিমঠ ও আশপাশের আরও কয়েকটি এলাকায় ক্রমাগত ভূমিধস ঘটে চলেছে। এ বিপর্যয় থেকে সেখানকার সেনাছাউনিও বাদ যায়নি। বহু সৈন্যকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। জোশিমঠে প্রায় এক হাজার বাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত হয়েছে। বিপন্নদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে সরকার।