ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে ভাষার মাস শুরুর দিনে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ একটি ফৌজদারি রিভিশন মামলায় রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে বাংলায় রায় দিয়েছেন। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। তারা মামলাটি গুণাগুণের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জাগো নিউজকে বলেন, ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দ্বৈত বেঞ্চ আজ (১ ফেব্রুয়ারি) এক ফৌজদারি রিভিশন মামলায় রুল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে বাংলায় রায় দিলেন।
তিনি বিচারকের বরাত দিয়ে জানান, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বললেন- ১৩ বছরের বিচারিক জীবনে প্রথম বাংলায় রায় দিলাম এবং বাংলায় এই রায় দিতে পেরে গর্ববোধ হচ্ছে। ভাষার মাসে আরও বাংলায় রায় দেবো।
আদালতে আজ রিভিশন আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মজনু মোল্লা ও মো. রুহুল আমিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি ও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিকী। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ।
মামলায় নালিশি দরখাস্তমতে, বাদী মো. জহিরুল ইসলাম বরগুনার এলজিইডির একজন ঠিকাদার। তিনি অভিযোগ করেন পাথরঘাটার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রিপন, উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন, এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন- তার প্রতিষ্ঠানের নামে দুই লাখ টাকা বিলের জন্য ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন।
এ কারণে তিনি বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিশেষ বিচারক আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু বিচারক মামলার গুণাগুণ বিচার না করে আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় মামলা কোনো কারণ না দেখিয়ে খারিজ করে দিয়েছিলেন। সে কারণে তিনি হাইকোর্টে রিভিশন দায়ের করেন। কোনো কারণ না লিখে মামলাটি বিচারিক আদালত খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আনীত রিভিশনের রুলটি হাইকোর্ট চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে রায় দেন এবং মামলাটি গুণাগুণের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশনা দেন।
এই রায়সহ আজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে মিলে অন্তত ১৪৯টি রায় ও আদেশ বাংলায় দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে পৃথক পৃথক বেঞ্চ এমন রায় ও আদেশ দেন।
এর মধ্যে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের চেম্বারজজ আদালত ১৪৫টি আদেশ বাংলায় দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, এখন থেকে চেম্বারজজ আদালতে বাংলায় আদেশ দিয়ে যাবেন।