ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে। তবে তেহরানের দাবি, জ্বালানি উৎপাদনের জন্যই কেবল তারা পারমাণবিক কর্মসূচি চালাচ্ছে।
নেতানিয়াহুর আশা, ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি আবার সচল করতে পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো কোনো পদক্ষেপ নেবে না। ইরানে বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড় এবং ইউক্রেনে রুশ বাহিনীকে ইরানি ড্রোন সরবরাহের প্রতিক্রিয়ায় এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েল এত দিন নিরপেক্ষ অবস্থান দেখিয়ে আসছিল। তবে গতকাল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দেশ ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা পাঠানোর কথা ভাবছে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, তেহরানবিরোধী পশ্চিমাদের আরও কঠোর অবস্থান চায় ইসরায়েল। এ জন্য নেতানিয়াহু এমন ভূমিকা নিচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্যারিসভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ফন্ডেশন জাঁ জরেসের গবেষক ডেভিড খালফা বলেন, ইউক্রেন কার্ড খেলার মধ্য দিয়ে নেতানিয়াহু পশ্চিমাদের সঙ্গে ইরানবিরোধী ফ্রন্টকে একত্র করার আশা করছেন।
খালফা আরও বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরদারের আশা করছেন নেতানিয়াহু। তিনি আরও চান, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করা হোক। ফ্রান্স ও জার্মানি এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে।
এর আগে কূটনৈতিক একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, ইরানকে মোকাবিলায় ‘দৃঢ়তা প্রয়োজন’-এ ব্যাপারে ফ্রান্স একমত।
ইউক্রেনের পক্ষে অংশ নেওয়াটা নেতানিয়াহুর জন্য ঝুঁকিহীন হবে না। কারণ, প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় রুশ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করা আছে। সেখানে ইরানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে ইসরায়েল অভিযান চালাতে গেলে রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে তা প্রতিহত করা হতে পারে।
ইরানে বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে বন্দী রাখা হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সরকার বলছে, তাঁরা রাজনৈতিক বন্দী।
ইরানের ইস্পাহান শহরে একটি সামরিক স্থাপনায় ড্রোন হামলার পর ফ্রান্সে সফর করলেন নেতানিয়াহু। ওই ড্রোন হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে তেহরান।
তা ছাড়া সম্প্রতি ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সহিংসতাও বেড়েছে। গতকাল ভোরে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। জবাবে রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনিরা। গত শুক্রবার পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি বসতি এলাকায় একটি উপাসনালয়ের বাইরে বন্দুকধারীর গুলিতে সাতজন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি দূতাবাস বলেছে, আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত ফ্রান্সে থাকবেন নেতানিয়াহু। সেখানে তিনি ফ্রান্সের ব্যবসায়ী ও ইহুদি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।