রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার ‘ফুড ফ্রন্টিয়ার্স ২.০’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপদ, পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ গ্রহণে উৎসাহিতকরণ এবং সৃজনশীল ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনটি ক্যাটাগরিতে পাঁচজন উদ্যোক্তা এবং বিশেষ একজন ব্যক্তিকে পৃথকভাবে বিজয়ী ঘোষণা দেওয়া হয়।
তিন ক্যাটাগরির মধ্যে ’অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসায়িক মডেল’ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা হলেন- এগ্রিভেঞ্চার (চ্যাম্পিয়ন ১০,০০০ মার্কিন ডলার) ও ফার্মজিলা (রানার আপ ৫,০০০ মার্কিন ডলার)। ‘যুগান্তকারী প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন’ ধারণা’ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা হলেন- কুক্যান্টস (চ্যাম্পিয়ন- ৮,০০০ মার্কিন ডলার) ও কৃষি স্বপ্ন (রানার আপ ৩,০০০ মার্কিন ডলার)। ‘উদ্ভাবনী বিপণন প্রচারাভিযান’ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা হলেন- কন্যা ওয়েলবিয়িং (চ্যাম্পিয়ন ৫,০০০ মার্কিন ডলার)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গেইনের লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফেকশন অ্যান্ড ভ্যালু চেইনের পোর্টফোলিও লিড আশেক মাহফুজ ও এসএম মাহমুদুল হাসান, ভারপ্রাপ্ত কোঅর্ডিনেটর, সান বিজনেস নেটওয়ার্ক, গেইন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশের সানের কান্ট্রি ফোকাল কাজী জেবুন্নেসা বেগমের সভাপতেত্ব অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চ্যানেল আই-এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. লুৎফর হাসান, জাতীয় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল গনি শোভন প্রমুখ।
বিজয়ীদের উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়ন, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য মোট ৩৩ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারের অনুদান ও প্রি-সিড তহবিল দেওয়া হয়।
’ফুড ফ্রন্টিয়ার্স ২.০’ শিরোনামে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করছে স্কেলিং আপ নিউট্রিশন (সান/ SUN) বিজনেস নেটওয়ার্ক, যা বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন/ GAIN ) এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিওএফপি / WFP)।
এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য- পুষ্টিকর খাদ্য পণ্যকে নিম্ন বা সীমিত আয়ের ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্যে উদ্ভাবনী উপায়গুলো চিহ্নিত করা। পাশাপাশি টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা আনয়ন ও সামাজিক উদ্যোগে ব্যবসায়িক দক্ষতা আনতে তরুণ উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা তৈরি করা। একইসঙ্গে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থার মাধ্যমে পুষ্টিকর খাদ্য পণ্যের চাহিদা তৈরি করা ও উদ্ভাবনী বিপণন ক্যাম্পেইন চিহ্নিত করা।
প্রতিযোগিতায় নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সরবরাহ ও গ্রহণে উৎসাহিত করতে নতুন ব্যবসায়িক মডেলের উদ্ভাবন, সাশ্রয়ী মূল্য এবং খাদ্যের গুণগত মানে সহজ প্রযুক্তিগত সমাধানে যেসব উদ্যোক্তারা কাজ করবেন তাদের যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে প্রথম যাচাই-বাছাই শেষে সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়।
সংক্ষিপ্ত তালিকা শেষে চূড়ান্ত বাছাইকৃত ১২টি প্রতিষ্ঠান বা দল ব্যবসায় ধারণা প্রদানের জন্য বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ ও ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে ঢাকায় তিন দিনের আবাসিক বুটক্যাম্প সেশনে অংশ নেন। আবাসিক বুটক্যাম্পে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ও প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি, ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে তরুণ উদ্যোক্তাদের করণীয় ও পরিকল্পনা নিয়ে পরামর্শ দেন। এর পাশাপাশি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ’ইনভেস্টর নাইট’ অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নো হ্যামেলিয়ার্স বলেন, ‘এই তরুণ উদ্যোক্তাদের এবং তাদের উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করাই একমাত্র টেকসই পন্থা যার মাধ্যমে কাউকে পেছনে না ফেলে টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়।’
অনুষ্ঠানে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি বলেন, ‘প্রযুক্তির উদ্ভাবনের মাধ্যমে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য আমাদের তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’
শাইখ সিরাজ বলেন, ‘স্মার্ট কৃষির জন্য ও তরুণদের আগ্রহী করার জন্য নীতি পরিকল্পনা অনেক জরুরি।’
এ আয়োজনে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে হিসেবে ছিল জাতীয় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের সংস্থা এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
