হজের প্যাকেজ মূল্য সংশোধন করে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সামনের চত্বরে আল-কোরআন স্টাডি সেন্টারের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের বাণিজ্যিক ভিত্তিক এ হজ প্যাকেজ প্রত্যাহার করতে হবে। অবিলম্বে ৪ লাখ টাকার মধ্যে নতুন হজ প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন, সাবেক বিচারপতি মীর হাসমত আলী, আল কোরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামানসহ অনেকে।
এর আগে গত ৬ মার্চ হজের প্যাকেজ মূল্য সংশোধন করে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
ওইদিন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আল কোরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামান ধর্ম মন্ত্রণালয়কে এ নোটিশ পাঠান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, সৌদি আরব, ইরান ও তুরস্ক সরকারকে নোটিশের অনুলিপি পাঠানো হয়। আগামী ৭ দিনের মধ্যে হজের প্যাকেজ পুনর্নির্ধারণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়। সোমবার (৬ মার্চ) নোটিশ পাঠানো আইনজীবী আশরাফ উজ জামান বিষয়টি জানিয়েছেন।
আশরাফ উজ জামান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ-সৌদি-বাংলাদেশ রুটে প্লেন ভাড়া ৭৬ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা।
প্রতি বছর দুই দেশের সরকার হজ যাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট কিনতে বাধ্য করে। এ কারণে টিকিট কিনতে হজ যাত্রীদের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়।
এসব কারণসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে চার লাখ টাকার মধ্যে হজ প্যাকেজ-২০২৩ সংশোধন, পরিবর্তন এবং পুর্ননির্ধারণ করতে নোটিশে অনুরোধ করা হয়।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে হজের খরচ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। অন্যদিকে কোরবানি ছাড়াই এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য সর্বনিম্ন খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।
আগের বছর এটি ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে দেড় লাখ টাকা বেড়েছে।
গত ১ মার্চ এক সংবাদে নিজেদের ‘লাভজনক প্রতিষ্ঠান দেখাতে হজযাত্রীদের পকেট কাটছে বিমান’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে হজের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে এবার।
সরকারি ও বেসরকারি হজ প্যাকেজে প্রায় ৭ লাখ টাকার মতো খরচ ধরা হলেও পশু কোরবানি ও খাবারের খরচসহ মোট ৮ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা লেগে যাবে।
কোরবানি ও খাবারের খরচসহ মোট ৮ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা লেগে যাবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হজের এমন খরচ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ অস্বাভাবিক বিমান ভাড়া।
তারা বলছেন, যৌক্তিক কারণ ছাড়া কেবল অতিরিক্ত লাভের আশায় ৩০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী এ বছর হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন নির্ধারিত হয়েছে।
এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন।
এ বছর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সৌদি আরবে গমনকারী শতভাগ হজযাত্রীর প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন মক্কা রোড চুক্তি অনুযায়ী বিমানবন্দরেই অনুষ্ঠিত হবে।