রবিবার , ১৯ মার্চ ২০২৩ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

বুড়িমারী বন্দরে জায়গা সংকট, নিত্যজটে জনদুর্ভোগ

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
মার্চ ১৯, ২০২৩ ১২:৩৯ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ-ভারত-ভুটান ত্রিদেশীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রুটে পরিণত হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর বুড়িমারী। তবে বন্দরটির ইয়ার্ডে জায়গা সংকট ও মহাসড়ক প্রশস্ত না হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ট্রাকের দীর্ঘজট এখানকার নিত্যদিনের চিত্র।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ১৯৮৮ সালে এই স্থলবন্দরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিদিনই শতশত ট্রাক আর কয়েক হাজার যাত্রী এ বন্দর ব্যবহার করেন।

বন্দরটি দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে যানবাহনের চাপ। ফলে প্রতিদিন সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন পাসপোর্টধারী যাত্রী, পর্যটক ও সাধারণ মানুষ। বন্দরের ধারণক্ষমতা কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শতশত সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী।

সরেজমিনে বুড়িমারী স্থলবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, ইয়ার্ডে কোনো জায়গা খালি নেই। বিভিন্ন পণ্যের ট্রাক দিয়ে তা পূর্ণ। ইয়ার্ডে ঢুকতে না পেরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কটিতে ট্রাকের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু ইয়ার্ডে থাকা ট্রাকগুলোও মালামাল খালাস করে দ্রুত বের হতে পারছে না। ফলে বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের মতো তীব্র যানজট যেন নিত্যদিনের ঘটনা। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন ট্রাকচালক, পাসপোর্টধারী যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।

এদিকে, সমস্যা নিরসনে বন্দরের পাশে নতুন একটি ইয়ার্ড নির্মাণকাজের অনুমোদন হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া কয়েক বছর আগে বুড়িমারী স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্ট থেকে বুড়িমারী বাজার পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের ১০ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রকল্পে অর্থায়ন করার কথা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি)। এরই মধ্যে এডিবির বিশেষজ্ঞ দল সমীক্ষা কার্যক্রম শেষ করেছে। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি টাকা। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি।

বুড়িমারী বন্দরে জায়গা সংকট, নিত্যজটে জনদুর্ভোগ

বুড়িমারী স্থলবন্দরের বাসিন্দারা বলছেন, বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে কামারহাট ও বুড়িমারী ঘুণ্টি বাজারে বাইপাস সড়ক নির্মাণ করলে স্থলবন্দর যানজটমুক্ত হবে।

বুড়িমারী শুল্কস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে এ স্টেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালের ৩০ মার্চ এ স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীত করা হয়। স্থলবন্দরের তিনটি শেডের ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৭৬৮ মেট্রিক টন এবং তিনটি ওপেন স্টাক ইয়ার্ডের ধারণক্ষমতা ৬ হাজার ২০৩ মেট্রিক টন। সময়মতো পণ্য খালাস না হওয়ায় ওপেন স্টাক ইয়ার্ডে ট্রাকগুলোকে দু-তিনদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।

বুড়িমারী বন্দরে জায়গা সংকট, নিত্যজটে জনদুর্ভোগ

বর্তমানে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত, ভুটান ও নেপাল থেকে কয়লা,পাথর, সিমেন্ট, পশুখাদ্য, ফলমূল, পেঁয়াজ, চাল, গম ও ভুট্টা আমদানি করা হয়। রপ্তানি হচ্ছে খাদ্যসামগ্রী, ঝুট কাপড়, ওষুধপত্রসহ বিভিন্ন পণ্য।

বর্তমানে প্রতিদিন ৫০০-৬০০টি ট্রাক বন্দরে আসা-যাওয়া করে। এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কিন্তু মহাসড়কটি প্রশস্ত না হওয়ায় ট্রাকগুলো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। বর্তমানে যে সড়ক আছে, তাও খানাখন্দে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজধানী থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক নির্মাণকাজের দ্বিতীয় পর্যায় চলমান। এ কাজের সঙ্গেই স্থলবন্দর থেকে রংপুর শহর পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। রংপুর-বুড়িমারী স্থলবন্দর জাতীয় মহাসড়ক চার লেন কার্যক্রম ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে তা কয়েক বছর পিছিয়ে গেছে।

বুড়িমারী বন্দরে জায়গা সংকট, নিত্যজটে জনদুর্ভোগ

বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকার বাসিন্দা জবিউল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, স্থলবন্দরের রাস্তাঘাটের যে অবস্থা তাতে একটি গাড়ি দাঁড়ালে আরেকটা যাওয়ার কোনো উপায় নেই। সরকার এ বন্দর দিয়ে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলেও রাস্তাটির বেহাল দশার কোনো উন্নতি নেই।

ভারতীয় ট্রাকচালক বিপু বলেন, ট্রাক নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। যানজটে মানুষের চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।

বুড়িমারী কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট (সিঅ্যান্ডএফ) অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক বকুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, স্থলবন্দরে ইয়ার্ডের জায়গা সংকট ও রাস্তা প্রশস্ত না হওয়ায় প্রতিদিন তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। বুড়িমারী স্থলবন্দরের দুইপাশে বাইপাস সড়ক চালু করলে এ যানজট থাকবে না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

বুড়িমারী বন্দরে জায়গা সংকট, নিত্যজটে জনদুর্ভোগ

সড়ক ও জনপথ বিভাগ লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার জাগো নিউজকে বলেন, রংপুর থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেনের কাজ সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কোঅপারেশন (সাসেক) প্রকল্পের অধীনে হবে। এটি আমাদের হেড অফিস দেখাশোনা করে।

তিনি আরও বলেন, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর শহর পর্যন্ত চার লেনের কাজ শেষ হলেই ওই ঠিকাদাররা রংপুর-বুড়িমারী স্থলবন্দরের কাজ শুরু করবে।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মো. গিয়াস উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাশে কয়েকশ একর জায়গা নিয়ে নতুন একটি ইয়ার্ডের নির্মাণকাজ অনুমোদন হয়েছে। বর্তমানে ফাইলটি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। ফাইলটি আমাদের কাছে এলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ - সারাদেশ