দরজায় কড়া নাড়ছে রমজান। তাই নিত্যপণ্যের সঙ্গে ক্রেতাদের নজর বেগুন, শসা, লেবুর দিকে। চাহিদা থাকায় বাড়ছে দামও। তবে এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে যমুনা নদীর মাছের দাম।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে জামালপুর সদর ও সরিষাবাড়ী উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে এমনটা জানা যায়।
দেখা যায়, দুসপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের কেজি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শসাও ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। এক হালি ছোট আকারের দেশি লেবু ২০-৩০ টাকা এবং বড় আকারের লেবু ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
আরামনগর বাজারের ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ বলেন, রমজানকে সামনে রেখে সব ধরনের সবজির দাম বাড়ছে। আজ এক বস্তা মরিচ (১২০ কেজি) পাইকারিতে ৬ হাজার টাকা দরে এবং ৪০ কেজির এক বস্তা বেগুন ১৮০০ টাকায় কিনেছি। তবে কাঁচামরিচের দাম একটু বেশি।
এদিকে নদী বিধৌত জামালপুর জেলায় সবসময় মাছের জন্য বিখ্যাত। একসময় যমুনা নদীতে অনেক মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর পাওয়া যায় না। তবে যা পাওয়া যায় তার দামও সবসময় বেশি থাকে।
মাছের বাজার ঘুরে জানা যায়, চ্যালা মাছ আগে ৩০০-৪০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৬০০-৮০০ টাকা কেজি রাখছে, দেশি শিং ৪৫০-৫০০ টাকা, ৫০ টাকা বেড়ে পুঁটি ২৫০, টাকি ২৬০-৩৫০, কৈ ৫০০, গলদা চিংড়ি ৭৫০-৮০০, নদীর সিলভার কার্প ১৬০, বাটা ১৭০-২০০। বাজারে উঠেছে ছোট সাইজের ইলিশ, যা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭৫০ টাকা কেজি দরে।
হাসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, মাছের দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে। এখন আর নদীর মাছ পাওয়া না গেলেও ব্যবসায়ীরা নদীর বলে চালিয়ে দেয়। আসল নদীর মাছ ৬০০-৮০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়।
রমজানের আগের দিন বাজার করতে এসেছেন খালেক মিয়া নামে এক কৃষক। রমজানের প্রথম দিন একটু ভালোমন্দ খেয়ে রোজা রাখতে চান তিন। কিন্তু বাজারে দাম দেখে পড়েন বিপাকে। তিনি বলেন, পুরো রমজানে রোজাদারদের পছন্দের তালিকায় থাকে বেগুন, শসা, লেবুসহ অন্য নিত্যপণ্য। এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়। এবারও তার ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু কৃষকরা যখন ফসল ফলায় তারা তাদের ন্যায্যমূল্য পায় না। একই জিনিস হাত বদলে চড়া দামে বিক্রি হয়। এক কেজি বেগুন কিছুদিন আগে কিনেছি ২০ টাকা কেজি দরে, অথচ এখন কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি।
সততা বাণিজ্যালয়ের ম্যানেজার জহুরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বাজার আগের মতোই আছে। পেঁয়াজের আমদানি ভালো, পেঁয়াজ আগেও তারা ৩২-৩৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করতেন, এখন একই দামে বিক্রি করছেন। কাঁচামরিচের দাম আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা, এখন বিক্রি করছেন ৪৫-৫০ টাকা দরে, তবে কালো মরিচের দাম একটু বেশি। বেগুন বিক্রি করছেন ৪৫ টাকা কেজি দরে।
এদিকে বুধবার জামালপুর সদর ও সরিষাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করেছেন জামালপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আরিফুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত দাম নিয়ে ক্রেতাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি। শসা, গাজর, বেগুন, মরিচসহ যেসব জিনিস রমজান এলেই বেড়ে যায় সেগুলোর দাম এখনো আগের মতই আছে। তাই দাম যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়াতে না পারে এজন্য প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করা হবে।
