কুমিল্লায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ১৭৯ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। যুবদলের বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডার ঘটনায় ওই মামলা করে পুলিশ। এই মামলায় ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা করেন। মামলা এজাহারে বলা হয়েছে, বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সরকারি কাজে বাধা ও হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করেছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই মামলায় এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার এজাহারে ২৯ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
কুমিল্লায় যুবদলের সভায় পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডা, আটক ২০
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল চারটায় কুমিল্লা টাউন হল মিলনায়তনে যুবদলের বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু হয়। বিভাগীয় সহসভাপতি আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিশেষ বক্তা ছিলেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্যের পর লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি ওই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় পুলিশ সমাবেশস্থলে গিয়ে জানায়, তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। তিনি এভাবে বক্তব্য দিতে পারেন না। এ নিয়ে টাউন হল মঞ্চে পুলিশ ও বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরই মধ্যে তারেক রহমান প্রায় ১০ মিনিটের মতো বক্তব্য দেন। একপর্যায়ে পুলিশ সেটি বন্ধ করে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে যুবদলের নেতা-কর্মীদের হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ টাউন হল এলাকা থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২২ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মধ্যে কুমিল্লা ছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুরের নেতা-কর্মীরাও আছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক তপন কুমার বাগচী বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার সময় কুমিল্লা টাউন হল এলাকা থেকে ১৪টি বিভিন্ন আকারের বাঁশের লাঠি, ৫৫টি বিভিন্ন আকারের ইটের টুকরা ও ৩৭টি পাথরের টুকরা উদ্ধার করা হয়।
তবে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেছেন কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সভাপতি উত্বাতুল বারী। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ বাধা দিয়েছে। এরপর সম্মেলনে আসা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়। ইফতারের আগে এভাবে গ্রেপ্তার নিন্দনীয়। রাজনৈতিকভাবে ফায়দা নেওয়ার জন্য এই মামলা করা হয়েছে।