সংবিধানের দোহাই দিয়ে ভোট চুরির মাধ্যমে আর ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ভোট চোরদের তালিকা করা হচ্ছে, চিহ্নিত করা হচ্ছে। এবার তাদের বিরুদ্ধে দেশের ভেতরে-বাইরে স্যাংশন আসবে। পালানোর কোনো সুযোগ নেই।
রোববার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর দারুসসালামে এসএ খালেকের বাসভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর দারুসসালাম থানা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল পূর্ব আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাজপথে তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে ফয়সালা করে আওয়ামী সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। এই সরকার সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতন চালাচ্ছে। কিছুদিন আগে সাংবাদিক শামসকে তুলে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তার অপরাধ ছিল তিনি সংবাদে ‘মানুষের পেটে ভাত নাই’ লিখেছেন। অথচ তার রিপোর্টটি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কথা ছিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সাউথ এশিয়ান ইকোনমিক ফোরামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমানে যা চলছে এটিকে বলে দুর্ভিক্ষ। এরচেয়ে খারাপ অবস্থা কোনো দেশে হতে পারে না। সাংবাদিককে তুলে নিয়ে তারা প্রমাণ করেছে তারা কত কঠিন সময় পার করছে।
সরকারের উদ্দেশে আমীর খসরু বলেন, সংবিধানের কথা বলে সরকার আরও একবার রাতের ভোট করার পায়তারা করছে। সংবিধান কী? এই যে শামসুজ্জামানকে নিয়ে গেছেন, এটা কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়? এই যে কিছুদিন আগে এক নারীকে (নওগাঁর সুলতানা জেসমিন) তুলে নিয়ে গেছেন, এটা কি সংবিধানের লঙ্ঘন নয়? সারাদেশে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর গায়েবি মামলা দেওয়া কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়? ভোট চুরি করে ক্ষমতা দখল কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়?
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, আজ দেশের অর্জিত স্বাধীনতা নেই। জনগণের ভোটাধিকার ও মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। একটা অবৈধ ও অনৈতিক সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। এই অবৈধ আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করাই আমাদের একমাত্র অঙ্গীকার।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের যখন আন্দোলনের ডাক আসবে, তখন আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তত থাকতে হবে। আন্দোলনের ডাক এলেই সবাইকে রাজপথে নামতে হবে। রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমেই এই জুলুমবাজ আওয়ামী সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
দারুসসালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এস এ সিদ্দিক সাজুর সভাপতিত্বে ও সার্বিক তত্বাবধানে ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাঈদ সোহরাব, মহিলা দলের সুলতানা আহম্মেদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মহানগর সদস্য হাজী মো. ইউসুফ, হুমায়ুন কবির রওশান, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর ইসলাম সাইদুল, মিরপুর থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী মো. দেলোয়ার হোসেন দুলু, মহিলাদল নেত্রী রুনা লায়লা রুনা, স্বপ্না আহম্মেদ, দারুসসালাম থানা বিএনপির আরিফ মৃধা, আবু সায়েম মন্ডল, বকুল মিয়া, আলমগীর হোসেন ভুট্টো, এইচ এম ইমরান, হুমায়ুন কবির, আমানুল্লাহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য এবিএমএ রাজ্জাক ও ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি গাজী রেজওয়ানুল হোসন রিয়াজ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।