বরিশালে আজ শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় নগরের বান্দ রোডে হেমায়েত উদ্দীন ঈদগায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং নগরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। ঈদের জামাত শেষে বরিশাল সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত মুসল্লিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ও সবার দোয়া চান।
বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় পুরো ঈদগাহে বৃষ্টিরোধক ত্রিপল টানায় বরিশাল সিটি করপোরেশন। তবে বৃষ্টি হয়নি। সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন মুসল্লিরা। ঈদের নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি এবং দেশের সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। দোয়া-মোনাজাতে খরা, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সব ধরনের মহামারি থেকে রক্ষার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বরিশাল এলেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ

ঈদের জামাত শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। ভবিষ্যতে বরিশালকে যাতে একটি সুন্দর, শান্তিময় ও আধুনিক নগর হিসেবে গড় তুলতে পারেন, সে জন্য মুসল্লিদের কাছে দোয়া চান তিনি। এরপর নগরের আলেকান্দা এলাকার কালুশাহ সড়কে ভাড়া বাড়িতে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও কুশল বিনিময় করেন আবুল খায়ের। সেখানে আগত ব্যক্তিদের আপ্যায়নেরও ব্যবস্থা করা হয়। ওই বাড়িতে দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও নগরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং অনেক সাধারণ ভোটারও শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য উপস্থিত হন।
যোগাযোগ করা হলে বেলা পৌনে একটার দিকে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার প্রিয় বরিশালবাসীকে ঈদুল ফিতরে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি বরিশালের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। যেভাবে তাঁরা আমার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানাচ্ছেন, এটা অভূতপূর্ব! তাঁদের সহযোগিতা আমাকে মুগ্ধ করেছে, আমি চিরকৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ হয়ে গেছি। তাঁদের এই ঋণ শোধ হওয়ার মতো নয়।’
আওয়ামী লীগের মনোনীত এ মেয়রপ্রার্থী আরও বলেন, ‘আজকের এই পবিত্র ও আনন্দের দিনে আমি সবার কাছে এই দোয়াই চাইছি, যেন আমি আমৃত্যু বরিশালবাসীর সুখে-দুঃখে তাঁদের পাশে থাকতে পারি। বরিশালের মানুষের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে পারি এবং তাঁদের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে পারি।’
এর আগে ঈদের জামাতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান। তিনি বলেন বলেন, এবারের ঈদ আনন্দ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হচ্ছে। মানুষ স্বস্তিতে-নির্বিঘ্নে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপনে বাড়িতে ফিরেছে। ঈদের এ ছুটিতে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন বিভাগীয় কমিশনার।
বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
একই ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করেন বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহাঙ্গীর হোসেন, বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এম জাহাঙ্গীর, বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান সাঈদুর রহমান, বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর আমিন উদ্দীনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং নগরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
নগরের দ্বিতীয় প্রধান জামাত হয় আমতলা মোড় এলাকার বরিশাল সদর মডেল মসজিদে। এখানে প্রথম জামাত সকাল সাড়ে আটটায় এবং দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে নয়টায় অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই দরবার শরিফে সকাল সাড়ে আটটায়, উজিরপুরের গুঠিয়া বায়তুল আমান জামে মসজিদ ও নেছারাবাদ দরবার শরিফে সকাল আটটায় ঈদের বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে পরস্পরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন মুসল্লিরা।