মঙ্গলবার , ২৫ এপ্রিল ২০২৩ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

‘রাষ্ট্রপতি’ প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদ নয়: হাইকোর্ট

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
এপ্রিল ২৫, ২০২৩ ৬:২০ পূর্বাহ্ণ

রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ‘দ্য অফিস অব প্রফিট’ ধারণ করেন, কিন্তু এটি প্রজাতন্ত্রের কর্মে একটি লাভজনক (অফিস অব প্রফিট) পদ নয়। রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণের পদ্ধতি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে অন্যদের নিয়োগের মতো নয়। তদুপরি প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মে নিয়োজিত কর্মচারীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের যেসব বিধান ও নিয়ম রয়েছে, সেগুলো রাষ্ট্রপতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা পৃথক দুটি রিট খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশে এমন অভিমত দেওয়া হয়েছে।

পাঁচটি অভিমত উল্লেখ করে রিট খারিজ করে হাইকোর্টের ৩৯ পৃষ্ঠার দেওয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ সোমবার (২৪ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত ১৫ মার্চ রিট দুটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন।

এর আগে রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে গত ৭ মার্চ একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান। রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা- সংক্রান্ত ইসির প্রজ্ঞাপন নিয়ে আবদুল মোমেন চৌধুরী, কে এম জাবিরসহ সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী ১২ মার্চ অপর একটি রিট করেন। পৃথক দুটি রিটের ওপর হাইকোর্টে একসঙ্গে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

পূর্ণাঙ্গ আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, সংবিধান অনুসারে ‘নির্বাচন’ এবং ‘নিয়োগ’ একই অর্থ বহন করে না। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের ঐক্যের প্রতীক। আর সংবিধানের নবম ভাগ (বাংলাদেশের কর্মবিভাগ) অনুসারে যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত, তারা প্রজাতন্ত্রের সেবায় নিয়োগকৃত কর্মচারী।

অভিমতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিত্বকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনের ৭ ধারা অনুসারে যে ঘোষণা (রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংক্রান্ত) দিয়েছেন, তা অবৈধ ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। আদেশে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক হলেও দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচনে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের ৯ ধারা কোনো বাধার সৃষ্টি করে না।

দুদক আইনের ৯ ধারা বলছে, কর্মাবসানের পর কোনো কমিশনার প্রজাতন্ত্রের কার্যে কোনো লাভজনক পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না।

অভিমতে বলা হয়, নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দুদকের সাবেক কমিশনার, যিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক একটি পদে ছিলেন, এটি কোনোভাবেই তাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে বা পদে অধিষ্ঠিত হতে অযোগ্য ঘোষণা করে না।

পাঁচটি অভিমত উল্লেখ করে পূর্ণাঙ্গ আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, সারবত্তা না থাকায় রিট দুটি সরাসরি খারিজ (সামারিলি রিজেক্ট) করা হলো।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রপতির পদ লাভজনক হলেও তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নন। সংবিধানের নবম ভাগে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত পদগুলো সম্পর্কে বলা আছে। রাষ্ট্রপতি তাদের চাকরির শর্তাবলি ও সুযোগ–সুবিধা নির্ধারণ করেন। প্রয়াত বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা নিয়ে আবু বকর সিদ্দিক নামে এক আইনজীবীর করা রিট খারিজ করে এর আগে এক রায়ে হাইকোর্ট বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা নিয়ে এবার আইনজীবীদের করা পৃথক রিট খারিজের আদেশে আবারও বিষয়টি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলো।

রিট খারিজের পর রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণার ইসির প্রজ্ঞাপন স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী এম এ আজিজ খান। আবেদনটি ২১ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন।

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিন শপথ গ্রহণ করেছেন। একই দিনে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবন ছেড়েছেন।

সর্বশেষ - সারাদেশ