বৃহস্পতিবার , ১৮ মে ২০২৩ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

‘আমার মাসুম দেশের জন্য জীবন দিলো, এখন আমি কী নিয়ে বাঁচবো’

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
মে ১৮, ২০২৩ ৩:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) হামলায় নিহত সেনাসদস্য আলতাফ হোসেন মাসুমের নোয়াখালীর (২৪) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার মা ও একমাত্র ছোটবোন বিলাপ করতে করতে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন।

বুধবার (১৭ মে) রাতে সদর উপজেলার কাদিরহানিফ ইউনিয়নের পূর্ব লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের ওই বাড়িতে গেলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

মাসুমের মা শাহীনুর আক্তার রেখা বিলাপ করে বলছিলেন, ‘আমার মাসুম এত সাহসী কবে হলো রে, আমারে একা রেখে দেশের জন্য জীবন দিলো রে। কে আমাকে একা করলো রে, এখন আমি কী নিয়ে বাঁচবো রে। আমি আর আমার মেয়েকে কে দেখবে গো’ বলেই চুপ হয়ে যান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালে মাসুমের বাবা আবুল কাশেম মারা যান। তিনি স্থানীয় রেলগেট এলাকায় ডেকোরেশনের ব্যবসা করতেন। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে ওই বছর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন মাসুম। মা ও একমাত্র ছোটবোন সানজিদা সুলতানা মিমকে নিয়ে সুখের সংসার সাজানোর প্রত্যাশা ছিল তার।

মাসুমের ছোটবোন সানজিদা সুলতানা মিম বলেন, গতবছর আমি এইচএসসি পাস করেছি। ভাইয়া আমাকে বলেছে অনেক বড় হতে হবে। দেশের সেবা করতে হবে। এখন আমাদের ভবিষ্যতের কী হবে। মাকে নিয়ে আমি এখন কী করবো, বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

মাসুমের বড় মামা মো. জহির উদ্দিন শাহিন জাগো নিউজকে বলেন, আমার এক খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে ভাগনের মৃত্যুর সংবাদ শুনি। বাবাহারা মাসুমের এমন আকষ্মিক মৃত্যুর সংবাদে দু’চোখে অন্ধকার দেখছি আমরা। বোন-ভাগনিকে এখন কী বলে শান্ত্বনা দেব ভেবে পাচ্ছি না। আমার ভগ্নিপতির মৃত্যুর পর ভাননে সংসারের হাল ধরে। আজ সেও দেশের টানে চলে গেলো।

কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি বলেন, প্রতিদিন হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস মেসেজে ভাগনের সঙ্গে কথা হতো। সে সবসময় আমার ভয়েস মেসেজ পেলেই রিপ্লাই দিতো। মঙ্গলবার ওকে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছি কিন্তু সে আর রিপ্লাই দেয়নি।

এদিকে, নিহত সেনাসদস্য মাসুমের পারিবারিক সূত্র জানায়, মরদেহ আনার জন্য তার ছোট মামা জসিম উদ্দিন শামীম চট্টগ্রাম গেছেন। মরদেহ নোয়াখালী আনা হলে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে দাফনের কথা রয়েছে।

মাসুমের প্রতিবেশী নুর উদ্দিন (৬১) বলেন, মাসুমের মতো এত নম্র-ভদ্র ছেলে এ এলাকায় দ্বিতীয়টি নেই। সে তার বাবার মতোই লাজুক স্বভাবের ছিল। সে যখন হেঁটে যেত আমরা তাকে দেখলে তার বাবার কথা মনে করতাম।

পরিবারের লোকজন জানান, সবশেষ রমজানের ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসেন মাসুম। ছুটি শেষে ২৬ এপ্রিল চাকরিতে যোগদানের উদ্দেশে যান তিনি। মা ও বোনের সঙ্গে প্রায়দিনই কথা হতো তার। গত তিনদিন আগে শেষবারের মতো মায়ের সঙ্গে কথা হয় মাসুমের।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুই সৈনিক নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও দুই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ - সারাদেশ

আপনার জন্য নির্বাচিত