চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রচণ্ড খরতাপে তালের শাঁসের কদর বেড়েছে। ফলে খরতাপে ক্লান্ত মানুষের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন হাট-বাজারসহ জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে বসছে তালের শাঁসের অস্থায়ী দোকান। আর এসব দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন ছোটবড় সকলেই, যা চোখে পড়ার মতো।
জানা গেছে, সুস্বাদু আর কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশ বেশি থাকায়, তা দেহের পানি শূন্যতা অনেকটাই পূরণ করে।
চিকিৎসকদের মতে, একদিকে ক্যালসিয়াম, ভিটামিনসহ নানা ধরনের পুষ্টিকর চাহিদা মিটছে তালের শাঁসে। অন্যদিকে মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস অবদান রাখছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। তবে কালের বিবর্তনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় তাল গাছের সংখ্যা কমে গেলেও বর্তমানে অনেকেই তালের আঁটি রোপণ করে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় তালের শাঁস বিক্রেতা জামাল উদ্দিন জানান, তিনি সদর উপজেলার বড়পুকুরিয়া এলাকায় বসবাস করেন। বছরের অন্যান্য সময় কৃষিকাজ করলেও এই সময়টায় তিনি তালের শাঁস বিক্রি করে থাকেন। সদর উপজেলার বরেন্দ্র এলাকা থেকে তিনি তালের শাঁস সংগ্রহ করে এই এলাকায় এসে বিক্রি করেন।
তিনি জানান, একটি তাল থেকে ২-৩টি শাঁস পাওয়া যায়। আর প্রতি পিস তালের শাঁস এখন ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গ্রামে গ্রামে ঘুরে কচি তাল কিনে এনে বাজারে বিক্রি করেন তিনি। তালের সংখ্যা ভেদে একটি গাছের দাম পড়ে ৫০০ থেকে হাজার টাকা। প্রতিদিন তিনি ৭০০ থেকে এক হাজার টাকার তালের শাঁস বিক্রি করেন। এতে তার সংসার বেশ ভালোভাবেই চলে বলে জানান তিনি।
একই এলাকায় তালের শাঁস বিক্রেতা রনি আহম্মেদ বলেন, কেউ একটু তরল, আবার কেউ একটু শক্ত শাঁস পছন্দ করেন। তবে অধিকাংশ মানুষ তরল ধরনের শাঁস পছন্দ করেন। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০ কাঁদি (ছড়া) তাল বিক্রি হয় তার। তিনি তালের মৌসুমে শুধু তাল বিক্রি করেন এবং বছরের অন্যান্য সময় বিভিন্ন কাজ করে থাকেন।
কচি তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ বলেন, একটি তালের শাঁসের ৯২ শতাংশই জলীয় অংশ। এতে আছে ক্যালরি, শর্করা, ক্যালসিয়াম, খনিজ ও ভিটামিন সি। তাই সব বয়সী মানুষের এই তালের শাঁস খাওয়া উচিত।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, বজ্রপাত রোধে বিভিন্ন রাস্তার ধারে তালগাছ রোপণ করা হচ্ছে। কৃষি অফিস ও বিভিন্ন সংগঠন আলাদাভাবে তালের গাছ রোপণ করে আসছে। এসব গাছের তাল পাকানোর জন্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে, যাতে বীজ করা যায়।