তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, যারা সহিংস শক্তি প্রদর্শন করতে পারছে, তাদের কথাতেই রাষ্ট্র চলছে; কিন্তু আমরা এটি চাই না। আমরা একটা ন্যায়বিচারের সমাজ চাই। যে সমাজে মানুষ তার অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে ভালোভাবে বাঁচতে পারে। আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুও এ কথাগুলো বলেছিলেন। তিনি ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন- বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ রাজনৈতিক মুক্তি চায়, অর্থনৈতিক মুক্তি চায়, সাংস্কৃতিক মুক্তি চায় এবং সামাজিক মুক্তি চায়।
বুধবার বেলা দেড়টার সময় নেত্রকোনার বেসরকারি সংস্থা স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির সম্মেলন কক্ষে ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স নেটওয়ার্ক’-এর সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সুলতানা বলেন, একটি সভ্য সমাজে এটি হতে পারে না। যদি একটাও হয়, সেটাও অপরাধ। তাই আমরা এটির প্রতিবাদ জানাবোই। আমাদের সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে, কোনো অপরাধীকে যে অপরাধের জন্য ধরা হয়েছে, তাকে সেই আনুপাতিক শাস্তির চেয়ে বেশি শাস্তি দেওয়া যাবে না। আরও বলা আছে, রাষ্ট্র এমন কোনো শাস্তি নির্ধারণ করতে পারবে না, যাতে সেই ব্যক্তির সুনাম বা অঙ্গহানি ঘটে কিংবা স্থায়ী কোনো ক্ষতি হয়। তিনি আরও বলেন, আইন মানুষকে শাস্তি বা কষ্ট দেয়ার জন্য নয়, বরং শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের পরিবেশ তৈরির জন্য। আমরা এখন অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাচ্ছি। তাই শুধু উন্নয়ন হলেই হবে না। সেই সঙ্গে সভ্যতারও বিকাশ হতে হবে।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন ও স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির সহযোগিতা। এ সভার আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যাডভোকেট সিতাংশু বিকাশ আচার্য।
স্বাবলম্বীর কর্মসূচি পরিচালক স্বপন কুমার পালের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ, স্বাবলম্বীর নির্বাহী পরিচালক বেগম রোকেয়া, অ্যাডভোকেট সাইদ আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী কল্যাণী হাসান, কোহিনূর বেগম, উদীচীর জেলা সংসদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক সঞ্জয় সরকার, কামাল হোসাইন, পল্লব চক্রবর্তী ও সাইফুল আরিফ জুয়েল প্রমুখ।
সভায় তৃণমূল পর্যায়ের মানবাধিকার কর্মীরা বিভিন্ন উপজেলার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।