মঙ্গলবার , ২৭ জুন ২০২৩ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

পাটুরিয়ায় ঘরমুখী যাত্রীর চাপ বাড়লেও জট নেই

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
জুন ২৭, ২০২৩ ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়। এই যাত্রীদের অধিকাংশই ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকাল বাসে করে পাটুরিয়া ঘাটে আসছেন। তবে ভোগান্তি ছাড়াই তাঁরা ফেরি ও লঞ্চে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথ পার হয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছেন। ঘাটে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসগুলোকেও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘাট এলাকায় অবস্থান করে দেখা গেছে, ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও লোকাল বাসে করে ঘাট এলাকায় আসছেন যাত্রীরা। নদীতে পানি বাড়ায় এবং ঝোড়ো বাতাসের কারণে লঞ্চের চেয়ে ফেরিতে বেশি ভিড় লক্ষ করা গেছে।

সকাল ১০টার দিকে ঘাট এলাকায় ২৫ থেকে ৩০টি যাত্রীবাহী বাসের সারি দেখা যায়। এসব যানবাহন এক ঘণ্টার মধ্যে ফেরিতে উঠে যাচ্ছিল। পাটুরিয়ার ৩ নম্বর ঘাট এলাকায় কথা হয় সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি বাসের যাত্রী আমিনুর রহমানের সঙ্গে। তিনি সাতক্ষীরা সদরে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন।

আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘাট দিয়ে প্রতি ঈদে বাড়িতে যান। এর আগে প্রতিবার সাত থেকে আট ঘণ্টা পাটুরিয়ায় ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হতো, যা ছিল অসহনীয় ভোগান্তির। তবে এবারের চিত্রটা ভিন্ন।

পণ্যবাহী গাড়ির চাপও দেখা যায়নি ঘাট এলাকায়। পাটুরিয়ায় দুটি ট্রাক টার্মিনালে অর্ধশত পণ্যবাহী গাড়ি রয়েছে। যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি এসব পণ্যবাহী গাড়িকে পার করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কমেছে। ভোগান্তি ছাড়াই এবার ঈদে ঘরমুখী যাত্রী ও যানবাহন নৌপথ পারাপার হচ্ছে।

এদিকে আজ বিকেলে পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ার পর শ্রমিকদের চাপ বাড়তে পারে। এ বিষয়ে শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, সমস্যা হবে না। পর্যাপ্তসংখ্যক ফেরি এবং সব কটি ঘাট সচল থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই সবাই পার হতে পারবে।

মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতে যানবাহনের চেয়ে যাত্রীর সংখ্যা বেশি। অনেকে যাত্রীই অভিযোগ করেন, ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে পাটুরিয়ায় আসতে তাঁদের কাছ থেকে প্রায চার গুণ ভাড়া আদায় করা হয়েছে।

ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন হাসান মাহমুদ-শান্তা আক্তার দম্পতি। দুই সন্তানকে নিয়ে মঙ্গলবার ভোরে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। ঢাকার গাবতলীতে থেকে লোকাল বাসে পাটুরিয়ায় আসেন।

মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ঘাটে ফেরি থেকে নামার পর হাসান-শান্তা দম্পতি বলেন, ‘আজ বিকেলে থেকে ঘাট এলাকায় প্রচণ্ড ভিড় হবে। তাই বাড়তি ভোগান্তি এড়াতে আমরা ভোরে রওনা করেছি। কিন্তু সমস্যা হয়েছে, বাস পাটুরিয়া ঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে নামিয়ে দেয়। এ সময় বৃষ্টিতে শিশুসন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’

মো. রাহুল গাজীপুরে মেঘনা গ্রুপে কাজ করেন। স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার নবীনগর থেকে রাজবাড়ীর পাংশায় যাচ্ছিলেন তিনি। রাহুলের অভিযোগ, নবীনগর থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত বাসভাড়া ৮০ টাকা। অথচ তাঁদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে ১৮টি ও মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে ৫টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তবে নদীতে পানি বাড়ায় বেশ স্রোত বইছে।

এ ছাড়া ঝোড়ো হাওয়ার কারণে স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় বেশি লাগছে। একই কারণে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথেও সময় বেশি লাগছে। পাটুরিয়ায় পাঁচটি ও আরিচায় দুটি ফেরিঘাটের সব কটিই সচল রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন আগে পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক গতিতে পানি বাড়ে। তখন অধিকাংশ ঘাটের র‌্যাম্পের মাথা তলিয়ে যাওয়ায় ফেরিতে গাড়ি ওঠানামায় সমস্যা হয়। দ্রুত ওই সব ঘাটে লোওয়াটার লেভেল থেকে মিডওয়াটার লেভেলে স্থানান্তর করা হয়। আপাতত চারটি ঘাটই সচল রয়েছে। নদীর পানি আরও বাড়তে থাকলে ঘাট মিডওয়াটার থেকে হাইওয়াটার লেভেলে স্থানান্তরের প্রস্তুত রয়েছেন তাঁরা।

সর্বশেষ - সারাদেশ