ঈদুল আজহার আগে কোরবানির পশু কেনাসহ বিভিন্ন উপলক্ষে নগদ টাকার চাপ তৈরি হয়। নগদ টাকার বাড়তি চাহিদা সামাল দিতে কলমানিতে টাকা নেয় অধিকাংশ ব্যাংক। কেবল ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে কলমানিতে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
মূলত এক ব্যাংক অন্য ব্যাংককে একদিনের জন্য যে টাকা ধার দেয়, সেটিই কলমানি। একদিনের বেশি সময়ের জন্য ধার দেওয়া হলে, সেসব ধারকে শর্ট নোটিশে ধার বলে গণ্য করে ব্যাংক।
ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি জুনের ১৮ কর্মদিবসে কলমানিতে (ওভার নাইট) ধারের পরিমাণ ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে কলমানিতে ধারের পরিমাণ ৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। স্বাভাবিক ৫ হাজারের কাছাকাছি অবস্থান করে এটি। ঈদে কলমানিতে ধার বেড়েছে দেড়গুণ।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার ব্যাংকগুলোর স্বল্পমেয়াদি ধারের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তারল্য সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোর স্বল্পমেয়াদি ধার সবচেয়ে বেশি। এতে ঈদের আগেই আন্তঃব্যাংকে স্বল্পমেয়াদি কলমানি মার্কেট চাঙা ছিল।
এর মধ্যে ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস সোমবার আন্তঃব্যাংকে ধারের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৫২ কোটি টাকা, আগের দিন রোববার এর পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। শেষ দুই কর্মদিবসেই কলমানিতে ব্যাংকগুলোর ধারের পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
চলতি জুন মাসে আন্তঃব্যাংকে স্বল্পমেয়াদি ধার বেড়েছে। চলতি মাস জুনের প্রথম দিন কলমানিতে ব্যাংকগুলোর ধারের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। আর ৪ জুন তা বেড়ে ৮ হাজার ৬৫৬ কোটিতে দাঁড়ায়। ৫ জুন ছিল ৮ হাজার ৯১১ কোটি, ৬ জুন ৯ হাজার ২২৯ কোটি টাকা, ৭ জুন ৮ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা, ৮ জুন ৯ হাজার ৮৮ কোটি টাকা, ১১ জুন ৯ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা, ১২ জুন ৮ হাজার ২২৯ কোটি, ১৩ জুন ৮ হাজার ৫০২ কোটি, ১৪ জুন ৭ হাজার ৫৩৯ কোটি, ১৫ জুন ৭ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা ধার করে ব্যাংকগুলো।
ঈদের আগে শেষ ৭ কর্মদিবসে প্রতিদিন গড়ে ব্যাংকগুলোর ধার ছিল সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ২৫ জুন ছিল ১০ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা, ১৮ জুন ৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা, ১৯ জুন ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ২০ জুন ৯ হাজার ৭১০ কোটি টাকা, ২১ জুন ৮ হাজার ৮৯ কোটি ও ২২ জুন ৯ হাজার ১০ কোটি টাকা, ২৬ জুন ধারের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৫২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চলতি জুন মাসে ব্যাংকগুলো কলমানিতে ধার করেছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা।