নির্বাচনি প্রচারে ক্ষমতার অপব্যবহার ও পাবলিক মিডিয়ার অপব্যবহারের জন্য ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো ২০৩০ সাল পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। শুক্রবার দেশটির সর্বোচ্চ নির্বাচনি আদালত এ রায় দিয়েছে।
বোলসোনারোর আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। তাদের দাবি, সাবেক প্রেসিডেন্টের বক্তব্য নির্বাচনের ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি। নিষেধাজ্ঞা শুরুর তারিখ ধরা হয়েছে ২ অক্টোবর ২০২২, সেদিনই ব্রাজিলে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়।
রায় শেষ পর্যন্ত বহাল থাকলে বোলসোনারো ২০২৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন না। খবর বিবিসির।
সাত বিচারকের মধ্যে পাঁচজনই এদিন দেশটির সাবেক এ কট্টরপন্থি প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করেন। গত বছরের সালের জুলাইয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠককে কেন্দ্র করে এই মামলা।
অভিযোগ উঠেছে, ওই বৈঠকে বোলসোনারো ব্রাজিলের নির্বাচনি ব্যবস্থা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন ও এর বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। বৈঠকটি অফিসিয়াল টেলিভিশন চ্যানেল ও ইউটিউবে সরাসরি প্রচার করা হয়। পরে ভুয়া নিউজ সম্পর্কিত নীতিমালা মেনে না চলায় সরাসরি প্রচার বন্ধ করে দেয় ইউটিউব।
ব্রাজিলের নির্বাচনে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ব্যালট হ্যাক করে কারচুপির সুযোগ আছে অনেক দিন ধরে এই দাবি করে আসছিলেন বোলসোনারো।
এমন মিথ্যা দাবির মাধ্যমে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছিল।বিচারে নেতৃত্ব দেয়া আলেকজান্দ্রে দে মোরেস বরেন, আসুন গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পক্ষে আমাদের বিশ্বাসকে পুনঃনিশ্চিত করি। অবশ্য কোনো অন্যায় করার কথা অস্বীকার করেছেন বলসোনারো।
গতকাল এক রেডিও স্টেশনকে জানান, আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। সর্বশেষ নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম ব্যবধানে হেরেছেন বোলসোনারো।
এর পর তার অনুসারীরা ব্রাজিলে কয়েক সপ্তাহ বিক্ষোভ করে। সরকারি ভবনে ভাঙচুর করে। নির্বাচনি আদালতের এই সিদ্ধান্তকে ‘পিঠে ছুরি মারা’ অভিহিত করে বোলসোনারো বলেছেন, ব্রাজিলে ডানপন্থি রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাবেন তিনি।
বোলসোনারো প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ২০২২ সালে তার দেওয়া এক বক্তব্যকে ঘিরে এ মামলাটি আবর্তিত হয়েছে। ওই বছরের ১৮ জুলাই রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় নিজের বাসভবনে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকে তিনি সেই ভুয়া দাবিটি করে বলেছিলেন, ব্রাজিলে যেসব ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহৃত হয় সেগুলো হ্যাকিং এবং বড় আকারের জালিয়াতির জন্য উপযোগী।