বর্ষায় ম্যালেরিয়া রোগের বেশি প্রভাব থাকে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে। তবে জেলা সদরের চেয়ে এ রোগের প্রকোপ উপজেলার দুর্গম এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি। চলতি বছরে জুরাছড়ি উপজেলায় এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা গেছে।
রাঙ্গামাটির সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, পাহাড়ে গত মে ও জুন এই দুই মাস ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এবছর অন্যান্য উপজেলার থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে জুরাছড়ি উপজেলায়। বিশেষ করে মৈদং ইউনিয়নে আমতলা, ভুয়াতলীছড়া, জামেরছড়ি ও দুমদুম্যা ইউনিয়নে গবাছড়ি, করইদিয়া, বগাখালী, দুমদুম্যা লাম্বাবাগছড়া, আদিয়াবছড়া, গ্রামের মানুষ অধিকহারে ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৪ সালে ম্যালেরিয়া রোগে ১৭ হাজার ৪৫ জন, ২০১৮ সালে দুই হাজার ৯৯৩ জন, ২০১৯ সালে ছয় হাজার তিনজন, ২০২০ সালে এক হাজার ৩৭৭ জন, ২০২১ সালে এক হাজার ৬০০ জন আক্রান্ত হয়েছিল।
জুরাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর মার্চে ৫৫ জন, এপ্রিলে ৭৯ জন, মে মাসে ২৩৩ জন, জুনে ২৩৬ জনের দেহে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু পাওয়া গেছে। যার মধ্যে জুনে দুমদুম্যা ইউনিয়নে ১৬৫ জনের দেহে এই রোগের জীবাণু শনাক্ত হয়।
দুমদুম্যা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাধন কুমার চাকমা বলেন, এ এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশি দেখা দিয়েছে। মানুষের মাঝে সচেতনতার অভাবে এটি বৃদ্ধি পেয়েছে। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি। তার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ব্র্যাকসহ ইউনিয়ন পরিষদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
জুরাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অনন্যা চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, জুরাছড়িতে এবছর ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত রোগী বেশি শনাক্ত হচ্ছে। যেসব এলাকায় ম্যালেরিয়া প্রবণতা বেশি সেখানে স্বাস্থ্যকর্মী ও ব্র্যাকের কর্মীরা কাজ করছে। তবে দুর্গমতার কারণে কিছুটা সমস্যার মধ্যদিয়ে সবাইকে কাজ করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ব্র্যাক থেকে বিনামূল্যে যে মশারি দেওয়া হয় তার মেয়াদ থাকে তিন বছর। এবছর তৃতীয় বছর হওয়ার কারণে মশারির কার্যকারিতা কমে গেছে। তাই ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যায় দুর্গম এলাকাগুলোতে বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর নতুন করে দুই হাজার ৩৫০টি মশারি বিতরণ করা হয়েছে।