শুক্রবার , ২১ জুলাই ২০২৩ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

চট্টগ্রামে অস্থির ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
জুলাই ২১, ২০২৩ ৪:১৪ অপরাহ্ণ

দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেল ও চিনি সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সরকার ভোজ্যতেলের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমালেও চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে এর প্রভাব নেই। আগের মতোই অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। আবার কোথাও কোথাও দাম কমার বদলে আরও বেড়েছে। সয়াবিন তেল ১৭৯ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ১৯৭ টাকায়। সব ধরনের ভোজ্যতেল সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে চিনির দাম বাড়াতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দিয়ে প্রস্তাব পাঠায় সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সরকার শুক্রবার পর্যন্ত দাম বাড়ানোর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখন তারা অতিরিক্ত দামে চিনি বিক্রি করছেন।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, চিনির দামে ফের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বাজারে যে পরিমাণ চিনির চাহিদা রয়েছে সরবরাহ তার চেয়ে অনেক কম। ফলে চিনির বাজার অস্থির হয়ে উঠছে। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন।

জানা যায়, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জকেন্দ্রিক কয়েকটি সিন্ডিকেটের হাতে চিনির বাজার জিম্মি। সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে চিনির বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। এদিকে বাজার থেকে অনেকটা উধাও হয়ে গেছে  মোড়কজাত চিনি। বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা।

গত মে মাসের মাঝমাঝি সরকার চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয়। সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়-বাজারে চিনির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখা, সাধারণ ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিবেচনায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) কর্তৃক প্রতি কেজি পরিশোধিত চিনি (খোলা) মিলগেট মূল্য ১১৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১১৭ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১২০ টাকা এবং প্রতি কেজি পরিশোধিত চিনি (প্যাকেট) মিলগেট ১১৯ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১২১ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১২৫ টাকা নির্ধারণ করার বিষয়ে সুপারিশ করছে। তবে এ দামে চট্টগ্রামের কোথাও চিনি বিক্রি হচ্ছে না।

জানা যায়, কিছু দিন আগে সরকারিভাবে প্রতিকেজি খোলা চিনির দাম ১৪০ ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ১৫০ টাকা নির্ধারণ করতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দিয়ে প্রস্তাব পাঠায় সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এ ব্যাপারে সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। কিন্তু এর আগেই চিনির বাজার অস্থির হয়ে উঠছে। তদারকির অভাবে ভোক্তা পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দামের কোনো প্রভাব পড়ছে না। খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে চিনির মন (৩৭.৩২ কেজি) বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৭০০ থেকে চার হাজার ৮০০ টাকা। কেজি হিসাবে বিক্রি হচ্ছে ১২৭ দশমিক ৫০ টাকার বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল মালিকরা কয়েক দিন আগে মনপ্রতি চিনির দাম আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। আমদানিকারকরা নানা অপকৌশলে চিনির দাম বাড়াচ্ছে। একদিকে আমদানিকারকরা ও মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে চিনির সরবরাহ কমিয়ে দেয়। এর পরই বাড়ানো হয় চিনির দাম। এ ক্ষেত্রে অজুহাত দেওয়া হয় সরবরাহ কমার। আর খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৭ টাকা থেকে ১৪৫ টাকায়।

নগরীর একাধিক কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও সরকার নির্ধারিত দামে ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে না। আগের দামে বা অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর চকবাজারের কাঁচাবাজার, বহদ্দরহাট কাঁচাবাজার, রিয়াজউদ্দিন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন দোকানে এখনো প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ১৯৭ টাকায়। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ টাকায়। খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৯৯ টাকায়, পামঅয়েল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামের মফস্বলের বিভিন্ন কাঁচাবাজারে আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল।

যদিও বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন নতুন দাম অনুযায়ী বোতলজাত সয়াবিন তেলে প্রতি লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে ১৭৯ টাকা। পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৪৩ টাকা কমিয়ে ৮৭৩ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫৯ টাকা। খোলা পামঅয়েল লিটারে পাঁচ টাকা কমিয়ে ১২৮ টাকা এবং বোতলজাত পামঅয়েল ১২ টাকা কমিয়ে ১৪৮ টাকা লিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত দাম ১২ জুলাই থেকে বাজারে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও শুক্রবার পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।

আড়তদার সাইফুল ইসলাম কাজল জানান, ভোজ্যতেল সরকার কমার নির্দেশনা দিলেও আমদানিকারকরা দাম কমাননি। ফলে আমাদেরও আগের দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাজারদর : চট্টগ্রামে সবজির দাম আগের মতোই বাড়তি। একইভাবে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সংকটের অজুহাতে বেড়েছে মাছের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগিতে দাম কমেছে ১০ টাকা। নগরীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে আকারভেদে তেলাপিয়া ২১০ থেকে ২৬০ টাকা, কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে পাঙ্গাশ আকারভেদে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে আকারভেদে কাতল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং রুই আকারভেদে ৩২০  থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া পাবদা ৪০০, টেংরা ৬৫০ ও চিংড়ি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির বাজারেও কাটছে না অস্থিরতা। বাজারে প্রতি কেজি আল ৪০ টাকা থেকে ৪৫, ছোট করলা ৭০, বরবটি ৭০ থেকে ৮০, পেঁপে ৪০, চিচিংগা ৬০, কাঁচামরিচ ৩৬০, চালকুমড়া ৪০, গাজর ১০০ ও কচুমুখী ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ - সারাদেশ