কানাডায় শিখ নেতা হরদীপ সিং নাজ্জারের হত্যার ঘটনা তদন্তে ভারতের উচিত কানাডাকে সহযোগিতা করা। এমন মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই শিখ নেতার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতীয় এজেন্টরা জড়িত এমন অভিযোগের বিষয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, এ বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত যেকোনো তদন্তে ভারতের উচিত কানাডাকে সহযোগিতা করা।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক ঘোষণায় জানান, গত জুনে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় ৪৫ বছর বয়সী হরদীপ সিং নিজ্জারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় নয়াদিল্লির এজেন্টরা জড়িত ছিল বলে অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে।
হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে আমরা ভারতকে উৎসাহিত করছি। যদিও নরেন্দ্র মোদী সরকার শুরু থেকেই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে হরদীপ সিং নাজ্জারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভারত এবং কানাডার মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের পর কানাডীয় নাগরিকদের জন্য ভিসা ইস্যু করা স্থগিত করেছে ভারত। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলে নিশ্চিত করেছে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম।
বিএলএস ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি জনপ্রিয় ভিসা সেন্টার তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, ভারতীয় দূতাবাস থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি: প্রক্রিয়াগত কারণে ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সালে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভিসা সেবা স্থগিত থাকবে।
একই সঙ্গে কানাডার কিছু অঞ্চলে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও নিজেদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে ভারত। স্পষ্টভাবে বিরোধের উল্লেখ না করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে কানাডায় নিজেদের নাগরিকদের নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরোধিতাকারী বিশেষ করে কূটনীতিক ও কিছু ভারতীয় কমিউনিটির ওপর হুমকি তৈরি হয়েছে।
তাই যেসব এলাকায় ভারতীয়রা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে বা সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কানাডার হাউজ অব কমন্সের সভায় ট্রুডো বলেন, হরদীপ সিং হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা।
তিনি বলেন, কানাডার মাটিতে একজন কানাডীয় নাগরিক হত্যায় বিদেশি কোনো সরকারের সংশ্লিষ্টতা আমাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। স্বাধীন, মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা যেভাবে কাজ করে, তার সম্পূর্ণ পরিপন্থি এ ধরনের ঘটনা। তার এমন মন্তব্যের পর থেকেই দুদেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।