নগরকেন্দ্রিক জীবনাচরণ ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভরতার কারণে চিরায়ত বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তপ্রায়। কিন্তু আমাদের হাজার বছরের লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গগুলোই ঊর্ধ্বগামী আধুনিকতার সিঁড়ির প্রাথমিক ধাপ। তাই আমাদের এই সংস্কৃতিগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। যদি তা না হয়, তবে আমরা ছিন্ন শিকড় পরগাছায় পরিণত হয়ে যাবো।
এ বিষয়টিকে সামনে রেখে নতুন প্রজন্মকে আমাদের লোকজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার একটি ভিন্নরকম অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের নামকরণ করা হয় ‘একদিন স্বপ্নের দিন’। এতে অংশগ্রহণ করে ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মেলায় বিলুপ্তপ্রায় লাঙ্গল-জোয়াল-মাথাল ইত্যাদি আদি কৃষি উপকরণ থেকে শুরু করে মাছ আহরণের উপকরণ কামার, কুমোর, ট্রানজিস্টর, গ্রামোফোনসহ বিভিন্ন প্রকার বাদ্যযন্ত্র, ঘোড়ার গাড়ি, পালকি, ঢেঁকি, লোহার তৈরি ১৫০ বছর পুরাতন সিন্দুক, রিকশা পেইন্টিং প্রভৃতি মেলায় প্রদর্শন করা হয়। মেলার বিশেষ আকর্ষণ ছিল বাংলার কুঁড়েঘর ও টকির বায়োস্কোপ। বাঁশের বেড়া, বেত ও খড় দিয়ে নির্মিত এই ঘরে মাটির কুপি, হারিকেন, পিতলের বাসন-কোসনসহ দৈনন্দিন ব্যবহারের বিভিন্ন তৈজসপত্র উপস্থাপন করা হয়।
বর্ণাঢ্য এই আয়োজনের প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত। উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার, বাংলা একাডেমির পরিচালক ও ফোকলোর গবেষক ড. আমিনুর রহমান সুলতান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা পারভীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. আমিনুর রহমান সুলতান। সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাকারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিংগাইর দিপন দেবনাথ।