বিএনপি নেতা ময়নুল ইসলাম মিঠুকে দুই ধরনের তথ্যে প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ আর এম মাহফুজার রহমান রাশেদের বিরুদ্ধে।
ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া প্রথম ইস্যু করা প্রত্যয়নপত্রে বলা হয়, ময়নুল ইসলাম কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত নন। দ্বিতীয়বার ইস্যু করা প্রত্যয়নপত্রে ময়নুল ইসলাম কামারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি বলে উল্লেখ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়নুল ইসলাম মিঠু কামারপাড়া ইউনিয়নের মধ্যহাটবামুনী গ্রামের মৃত আবুল কাশেম বিএসসির ছেলে। তিনি কামারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। সাদুল্লাপুর থানায় দায়ের হওয়া নাশকতার পরিকল্পনার মামলায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পাঁচদিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।
ময়নুল ইসলামের জামিনের জন্য আদালতে ইউপি চেয়ারম্যান এ আর এম মাহফুজার রহমান রাশেদ ও কামারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সরকারের সই করা দুটি প্রত্যয়নপত্র উপস্থাপন করা হয়। ১৮ নভেম্বর দলীয় এবং ইউনিয়ন পরিষদ প্যাডে সিল-সই করা ওই প্রত্যায়নপত্রে বলা হয়েছে, ময়নুল ইসলাম কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তিনি দীর্ঘ সাত-আট বছর ধরে ঢাকায় কর্মরত আছেন।
ময়নুল ইসলাম মিঠুকে দেওয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ১৮ নভেম্বরের প্রথম প্রত্যয়নপত্রের সূত্র ধরে ২২ নভেম্বর জাগো নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে তড়িঘড়ি করে ইউপি চেয়ারম্যান দ্বিতীয় প্রত্যয়নপত্রটি ২০ নভেম্বর তারিখ দেখিয়ে ইস্যু করেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে জাগো নিউজের প্রতিবেদকের হাতে আসে ময়নুল ইসলামের নামে ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া দ্বিতীয় প্রত্যয়নপত্রটি।
পরিষদের প্যাডে ১৮৮ নাম্বার স্মারকে ইস্যু করা প্রত্যয়নপত্রে ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমানের স্বাক্ষর দেখানো হয় গত ২০ নভেম্বর। ওই প্রত্যয়নপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, প্রকৃতপক্ষে ময়নুল ইসলাম কামারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এরআগে, ১৮৭ নাম্বার স্মারক মূলে ভুলবশত ও আনিচ্ছাকৃত একটি প্রত্যয়নপত্র তাকে দেওয়া হয়েছে।
একই ব্যক্তির নামে ইস্যু করা দুই ধরণের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব-কর্তব্য এবং তার ভুমিকা নিয়েও।
স্থানীয়রা বলছেন, একজন ব্যক্তির সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য কিংবা কোনো ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে একেক ধরনের প্রত্যয়নপত্র দেওয়া সমীচীন নয়। এজন্য এ ঘটনায় অন্য কোনো রহস্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত।
দুটি প্রত্যায়নপত্র দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ আর এম মাহফুজার রহমান রাশেদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রথমে ময়নুল ইসলামকে প্রত্যয়নপত্রটি না জেনেই দিয়েছি। পরে তার সম্পর্কে জানার পর নতুন আরেকটি প্রত্যয়নপত্র দেই। মূলত ময়নুল ইসলাম বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে তিনি কামারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি পদে আছেন।