আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিলো রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলির হাতে ট্রফি দেখার আশায়। শুধু দর্শক কেন, ভারতের পুরো মিডিয়া জগত যে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলো, তা বলাই বাহুল্য। রোহিত-বিরাটদের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি ওঠার মুহূর্ত কে মিস করতে চায় বলুন!
কিন্তু ভাগ্য যে তাদের এতটা খারাপ হবে কে ভেবেছিলো? অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬ উইকেটে হেরে, পঞ্চাশের মারাকানার মতো নিস্তব্ধতা নেমে এসেছিলো নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামজুড়ে। চোখের জ্বলে, দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে মাঠ ছেড়েছিলো দর্শকরা। ভারতের মিডিয়াকর্মীরাও এর ব্যতিক্রম নয়।
বিশ্বকাপ ফাইনালের মাত্র চারদিন পর আবারও মাঠে নামতে হচ্ছে ভারতকে। কিন্তু বিশ্বকাপে হৃদয়ভঙ্গের ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ভারতীয়রা। যে কারণে দেখা যাচ্ছে, ভারত-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হলেন মাত্র দু’জন সাংবাদিক।
বিশাখাপত্মনমে অধিনায়ক সুর্যকুমার যাদব ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন। এসে দেখেন পুরো সংবাদ সম্মেলন কক্ষ ফাঁকা। দু’জন মাত্র সাংবাদিক তার সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে এসেছেন। মিডিয়ারই যখন এই সিরিজ নিয়ে মোটেও আকর্ষণ নেই, সেখানে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ কতটা দর্শকদের আকর্ষণ করতে পারবে, সেটা এখনই অনুমান করে নেয়া যায়।
বিশ্বকাপের সময় যেখানে সংবাদ সম্মেলনগুলো গমগম করতো, প্রায় ২০০’র বেশি সাংবাদিক আসন গ্রহণ করতেন। অনেককে আসন না পেয়ে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে হয়েছিলো, সেখানে ভারতের অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে মাত্র দু’জন সাংবাদিককে পেলেন সুর্যকুমার।
এ ঘটনায় বিস্ময়ে অবাক হয়ে গেছেন নেটিজেনদের একাংশ। অনেকে বলেছেন, এটা তো প্রত্যাশিত। কারণ বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের রেশ এখনও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তার আগেই দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ শুরু করে দেওয়া হচ্ছে। তাই ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। এমন সূচি নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ওপর ক্ষোভ ঝাড়তেও দেখা গেছে দেশটির ক্রিকেট সমর্থকদের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন লিখেছেন, ‘মাত্র দু’জন সাংবাদিক গেলেন প্রেস কনফারেন্সে? কী? এটা বেশ অবাক করে দেওয়ার মতো বিষয়। তবে এটা সম্ভবত একটা স্রেফ পর্যায়। এবার সেটা বাড়বে।’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘এটা তো হওয়ারই ছিল। এত তাড়াতাড়ি টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করে দেওয়া হচ্ছে।’
ভারতীয় বোর্ডকে লক্ষ্য করে একজন লিখেছেন, ‘গত চার বছরের সবচেয়ে বড় ম্যাচ খেলার তিনদিনের মধ্যে কে ফের একটা দ্বি-পাক্ষিক সিরিজের জন্য যাবেন? উল্টাপাল্টা সূচি।’ অপর একজন বলেন, ‘বিসিসিআই সম্ভবত একটা ইঙ্গিত পেল যে খেলা মাঠে কতজন মাঠে আসতে পারেন।’
আজ বিশাখাপত্মনমে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত। যে দলের নেতৃত্বে দিচ্ছেন সুর্যকুমার যাদব। যিনি বিশ্বকাপের দলে ছিলেন। ফাইনালও খেলেছেন। তার ব্যাট দারুণভাবে হতাশ করেছে ভারতীয় সমর্থকদের।
এছাড়া বিশ্বকাপের দলে থাকা ইশান কিশান এবং প্রাসিদ কৃষ্ণা (হার্দিক পান্ডিয়া ছিটকে যাওয়ায় ভারতীয় দলে যোগ দিয়েছিলেন, তবে বিশ্বকাপে কোনও ম্যাচ খেলেননি) আছেন। আর শেষ দুটি ম্যাচে থাকবেন শ্রেয়াস আয়ার। বাকি সবাই নতুন খেলোয়াড়। অর্থাৎ তারা বিশ্বকাপের দলে ছিলেন না।