নারায়ণগঞ্জ -১(রূপগঞ্জ) আসনের কাঞ্চন পৌরসভা এলাকায় নৌকার প্রার্থী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সমর্থিত দু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কাঞ্চন পৌর এলাকার কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসূল কলির সঙ্গে কাঞ্চন পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম লিটুর দুপক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এ সময় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে এলাকার দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে।
হামলাকারী দুটি গ্রুপ দেশীয় ধারাল অস্ত্রসহ মহড়া সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘণ্টাব্যাপী পুরো এলাকায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাতটার দিকে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কাঞ্চন বাজারে এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাঞ্চন পৌর এলাকার রাজনৈতিক পূর্ব আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসূল কলির সঙ্গে কাঞ্চন পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম লিটুর দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। প্রায় সময়ই তাদের দুই গ্রুপের লোকজনের মাঝে ধারাল অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় দুই গ্রুপই মাঠে রয়েছে। এখানে উভয় গ্রুপ পেশী শক্তি দেখাতে এবং গ্রুপের লোকের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের লোকজনকে বিভিন্ন কৌশলে এবং বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে টেনে আনছেন।
এ নিয়ে দু গ্রপের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। ঘটনা জের ধরে দু’দলই সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। বৃহস্পতিবার রাত সাতটার দিকে আব্দুর রহিম লিটুর লোকজন রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন অস্ত্রের সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রথমে গোলাম রসুল কলির ছোট ভাই নূর হোসেনের মালিকানাধীন কাঞ্চন বাজারে অবস্থিত মুসলিম সুইটস এন্ড হোটেল নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় পুরো বাজার এলাকায় ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে বাজার এলাকা ত্যাগ করে চলে যান। এক পর্যায়ে গোলাম রসুল কলির লোকজন এসে প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আহতদের স্থানীয় ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে ভোলাবো তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আটজনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত নিয়ে উভয় পক্ষ একে অপরকে দোষারপ করছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
ভুক্তভোগী নুর হোসেন জানান, কোনো কারণ ছাড়াই অহেতুক আব্দুর রহিম লিটুর সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং নগদ টাকা ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। অন্যদিকে লিটুর পক্ষের লোকজন জানায়, তাদের ওপর প্রথম হামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপঙ্কর সাহা বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার নেপথ্যের কারণ জানিয়ে তিনি আরও জানান, দু’ গ্রুপের মধ্যে পূর্ব থেকে অধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ ছিল। তবে মূল ঘটনা পুলিশ উদেঘাটনে তদন্ত করছে। সংঘর্ষকারীদের আটকে অভিযান চলছে।