নির্বাচনের বিরোধিতাকারী এবং বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুল আলোচিত ‘ভিসা নীতি’ প্রয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ সফররত দেশটির প্রতিনিধিদলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ওপর ‘ভিসা নীতি’ প্রয়োগ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এখন বাংলাদেশ সফর করছে। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আইআরআই ও এনডিআই’র ১২ সদস্যের কারিগরি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসার কথা। তাদের অগ্রগামী দলের পাঁচজন এখন বাংলাদেশ সফর করছেন। এ প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ অবস্থান করবে। প্রতিনিধিদল ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিংস পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে এবং সেগুলোর মূল্যায়ন করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি পরিবেশ বিঘ্নিত ও বাধাগ্রস্ত করছে বিএনপি, যারা ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এত কথা বললো। যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করবে, বিঘ্ন সৃষ্টি করবে; তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি প্রয়োগ করা, এটা তো আমেরিকারই বহুল প্রচলিত ঘটনা।
‘আমেরিকার ক্ষমতার রাজনীতির প্রধান দুই দল ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের যারা প্রতিনিধিত্ব করে, তাদের পাঁচজন প্রতিনিধি এখন বাংলাদেশে আছে। আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে নৌকা বা স্বতন্ত্র প্রার্থী যে-ই হোক, তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের যেকোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ মেনে নেবে, এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। আচরণবিধি যাতে যথাযথভাবে প্রয়োগ হয় এবং যদি কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা হয়, এটা দেখার দায়িত্ব তাদের।’
‘এখানে আমি কোনো দল বুঝি না। প্রতিযোগিতা যদি বিঘ্নিত হয়, বিশৃঙ্খলা হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে, দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কোনো আপত্তি করবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। নৌকার প্রার্থী অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী, কারোরই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। এটা আমরা সমর্থন করি না। নির্বাচন কমিশন যে অ্যাকশন নেবে, আমরা সেটা সমর্থন করি।’
গত ১৫ বছরে ৯২ হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে বলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) যে দাবি করেছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে পাল্টা প্রশ্ন করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই ৯২ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেলো? কোথায় আছে? সেটা আগে বলেন। সন্ধান দিলে আমরা জবাব দেবো। আমাদের জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।