রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসেছে যশোর জেলা প্রশাসনও। অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তারা। এরইমধ্যে জেলার হোটেল রেস্তোরাঁসহ ৭৫৮টি আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিককে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। নোটিশে তাদের প্রতিষ্ঠানে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি স্থাপন নিশ্চিত করে হালনাগাদ তথ্য ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অবহিত করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৩ মার্চ যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নোটিশে বলা হয়, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে জেলার ৮ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তার অধিক্ষেত্রের মধ্যে থাকা আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবন মালিক, বিপণী বিতান মালিক সমিতি, বাজার মালিক সমিতি এবং হোটেল ও রেস্তোরাঁয় বিধি মোতাবেক অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি (ড্রাই পাউডার ফায়ার এক্সটিংগুইসার ও কার্বন-ডাই অক্সাইড ফায়ার এক্সটিংগুইসার) স্থাপনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হলো।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স যশোরের উপসহকারী পরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা জানান, জরুরি ভিত্তিতে অগ্নিঝুঁকি নিরসন ও অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে জেলার ৮ উপজেলার ৭৫৮ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে তাদের প্রতিষ্ঠানে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি স্থাপন নিশ্চিত করে হালনাগাদ তথ্য দিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৬৬টি বাজার মালিক সমিতি, মার্কেট, সুপার মার্কেট ও শপিং মল ৮৭টি, হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৫০৫টি, বহুতল ভবন ৪৫টি এবং হোটেল রয়েছে ৫৫টি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এরইমধ্যে যশোর পৌর এলাকার হোটেল সিটি প্লাজা, হাসান ইন্টারন্যাশনাল, কাপুড়িয়াপট্টির হোটেল নয়ন, হোটেল চৌধুরী, হোটেল ওরিয়ন ইন্টারন্যাশনাল, রেলবাজারের হোটেল শাহানাজসহ শতাধিক আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবন মালিক, বিপণী বিতান মালিক সমিতি, বাজার মালিক সমিতি এবং হোটেল ও রেস্তোরাঁয় এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যশোরের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ বলেন, অনেক ভবন ও প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাদি বাস্তবায়ন ব্যতীত বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার কারণে সারাদেশে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব অগ্নি দুর্ঘটনায় জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ ব্যবসায়িক ও আবাসিক পরিবেশ বজায় রাখার নিমিত্তে ‘অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন ২০০৩’ এর ধারা ২(খ) অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান/ভবনের অগ্নিঝুঁকি নিরূপণের জন্য সরেজমিন পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে হাতের কাছে ফায়ার এক্সটিংগুইসার রাখতে ব্যাপক সচেতনতা ছাড়া এমন দুর্ঘটনা মোকাবিলা করা কঠিন। শুধু ফায়ার সার্ভিস এই সংকট মোকাবিলা করতে পারবে না। এর জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় প্রশাসন, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, অগ্নিনির্বাপণে জলাধার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যশোরের বড়বাজারের আশপাশে কোনো জলাধার নেই। তিনি এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।