বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে মুক্ত করতে কোনো ধরণের সামরিক অভিযান না চালাতে নাবিকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে জলদস্যুরা। কাছাকাছি এলাকা থেকে ইইউর যুদ্ধ জাহাজকে সরিয়ে নিতেও নাবিকদের নানান ধরণের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে তারা। এরইমধ্যে জিম্মি করা জলদস্যুদের সাথে পান্টল্যান্ডের ভূমির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান শুরু করেছে পান্টল্যান্ড পুলিশ।
তবে কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম আজ শনিবার বলেন, ‘রক্তক্ষয়ী কোনো অভিযানকে আমরা সমর্থন দেবো না। নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করার ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে জিম্মিদশার অবসান চাই।’
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর ইইউ নেভাল ফোর্সের ‘অপারেশন আটলান্টার’ একটি যুদ্ধ জাহাজ আবদুল্লাহকে কাছাকাছি এলাকা থেকে পর্যবেক্ষণ ও হেলিকপ্টার চক্কর দেয়ার পর থেকেই আবদুল্লাহর নাবিকদের ওপর চাপ প্রয়োগ শুরু করেছে দস্যুরা। মাঝেমধ্যে ভিএইচএফ ব্যবহার করে নৌবাহিনীকে অনুরোধও জানাতে হচ্ছে যেনো কাছে না আসে। এছাড়া জাহাজ মালিক পক্ষকে অভিযানের অনুমতি না দেয়ার জন্য নাবিকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে।
জাহাজের চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের ভাই আবদুন নুর খান আসিফ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমার ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছে। তিনি জানান-জাহাজে সামরিক অভিযান না চালাতে নাবিকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে দস্যুদেও পক্ষ থেকে। তাদের নানান ধরণের হুমকি-ধামকিও দেয়া হচ্ছে।’
পান্টল্যান্ড পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবদুল্লাহ জাহাজের ভেতর দস্যুদের জিনিসপত্র পৌঁছে দেয়ার কাজে নিয়োজিত একটি গাড়িকে আটক করা হয়েছে। পান্টল্যান্ড পুলিশ কমান্ডার মোহাম্মদ আলী আহমেদ মারদুউফ বলেছেন, ‘জলদস্যুদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য আমরা পূর্বাঞ্চলে একটি অভিযান শুরু করেছি। যাতে তারা এই এলাকার ভূমি থেকে আর কোনো সহযোগিতা না পায়। আমাদের পরিকল্পনা হলো, জলদস্যুরা যাতে নিজেদের সংগঠিত করতে না পারে এবং এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে যারা আছে, তারা যাতে তীর থেকে আর কোনো সাহায্য না পায়।’ তিনি বলেন, ‘জাহাজে থাকা জলদস্যুদের হাতে এখন দুটি পথ আছে। হয় তাদের পান্টল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করা। অথবা বিদেশি বাহিনী যেমন এমভি রুয়েন থেকে জলদস্যুদের ধরে নিয়ে গেছে, তাদেরও সেই পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতো থেকে কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’। জাহাজে ২৩ নাবিক রয়েছেন। জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজটি চট্টগ্রাম ভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং কর্পোরেশনের। ২০ মার্চ দুপুরে জলদস্যুদের প্রথম ফোন পায় মালিকপক্ষ।