গর্ভকালীন সময়ে ও শিশু জন্মদানের সময় মায়েদের নানা ঝুঁকি থাকে। মাতৃমৃত্যু ও শিশুর মৃত্যু রোধে এবং মা-শিশুকে সুস্থ রাখতে হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে শিশু জন্মদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকায় কোনো স্বাস্থ্যসেবা ছাড়াই ঘরেই সাধারণভাবে শিশু জন্মদানের চেষ্টা করানো হয়। তাদের মাঝে গর্ভকালীন সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং হাসপাতালে ডেলিভারি করানোর বিষয়ে সঠিক জ্ঞান থাকেনা। ধর্মীয় গোঁড়ামিও অনেকটা বাধাগ্রস্ত করে হাসপাতালে শিশুর জন্মদান।
সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর গুলশান ২ এর একটি হোটেলে আয়োজিত দ্বীপ এলাকায় মিডওয়াফ পরিচালিত স্বাস্থ্য সেবা প্রধান শীর্ষক জাতীয় পর্যায়ে জ্ঞান আদান-প্রধান ওয়ার্কশপে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা সরকারিভাবে গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের সেবাদানে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পার্টনার্স ইন হেলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (পিএইচডি) ও কনসার্ন ওয়ার্লওয়াডের যৌথ প্রকল্পে দেশের দ্বীপ এলাকায় পরিচালিত হচ্ছে মিডওয়াইফ ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা প্রজেক্ট। এই প্রকল্প ভোলা জেলার চরফ্যাশন এবং মনপুরা উপজেলায় পরিচালিত হয়। এই প্রকল্পে মাধ্যমে মিডওয়াইফদের মাধ্যমে হাসপাতালে প্রায় ৬০০ শিশুর জন্ম হয়েছে।
দ্বীপ এলাকায় মাঠপর্যায়ে কাজ করে ও নানাভাবে বুঝিয়ে হাসপাতালে শিশু জন্মদানে উৎসাহিত করতে কাজ করেছেন মিডওয়াফ ইতি আক্তার। তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলে মানুষদের হাসপাতালে নিয়ে আসা অনেক কষ্টকর। পরিবার থেকে শ্বশুর শ্বাশুড়িরা রাজী হতে চায়না। তারা চায় বউয়ের ডেলিভারি ঘরেই হোক।
তিনি বলেন, এলাকায় ধাত্রীরাও সমস্যা করে। তারা প্রথম থেকে একজন গর্ভবতীকে দেখাশোনা করেনা। শুধুমাত্র বাচ্চা আসার আগে তাদের পরিবারগুলো ডেকে নিয়ে আসে। এছাড়া দ্বীপ এলাকা হওয়ায় গভীর রাতে যদি শিশু জন্মদানের সময় হয় নদী পার হয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা সম্ভব হয়না।
বক্তারা জানান, গ্রামগুলোতে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে পদ থাকলেও মিডওয়াইফ নেই। সরকারের যথাযথ উদ্যোগ নিলে সুস্থভাবে শিশু জন্মদান সম্ভব হবে এবং গর্ভের শিশুও সুস্থ থাকবে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরক্তি মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা আহমেদুল কবীর, পিএচডির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুস সালামসহ পিএচডি ও কনসার্ন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।