বুধবার , ৫ জুন ২০২৪ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি বাড়লেও বাজেটে বরাদ্দ বাড়ে না

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
জুন ৫, ২০২৪ ১২:২৩ অপরাহ্ণ

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি বৈশ্বিকভাবেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। প্রতিকূল ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। যার প্রভাবে প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা বাড়ছে। বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ছে দেশ। তবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারের বাজেট বরাদ্দ সেভাবে বাড়ছে না। বরং গত কয়েক অর্থবছরের পরিসংখ্যানে উল্টো চিত্রই দেখা গেছে।

তথ্য বলছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জন্য যে বাজেট বরাদ্দ দিয়েছিল সবশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তার চেয়ে কম বরাদ্দ দেয়। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এবারের বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা পরিবেশবাদীদের।

দেশের আবহাওয়া প্রতিনিয়ত রূপ বদলাচ্ছে। উন্নত দেশগুলোর অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের কারণে বাড়ছে তাপমাত্রা। প্রতিকূল এ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হাঁসফাঁস জনজীবনে। অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ায় প্রকট হচ্ছে পরিবেশগত হুমকি।

বাজেটে আমাদের জলবায়ু খাতের বরাদ্দগুলো পরিকল্পনা মাফিক ও পর্যাপ্ত হচ্ছে না। আগামী পাঁচ বছরে কোথায় কোথায় ঝুঁকি বাড়বে, সে অনুযায়ী অ্যাসেসমেন্ট করে বাজেট হওয়া উচিত।- এম জাকির হোসাইন খান

জলবায়ু পরিবর্তনের এ বিরূপ প্রভাবে শুধু মানুষ নয়, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য ও প্রাণ-প্রকৃতিও। এ অবস্থায় অভিযোজন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ। কিন্তু বাংলাদেশে বছরজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা নিয়ে সভা-সেমিনার হলেও, পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো নিয়মিত তৎপরতা দেখালেও সরকার সে অর্থে অর্থ বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না।

কমছে জলবায়ু অর্থায়ন

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের গত কয়েক বছরের বাজেট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা এক লাফে ৭৩১ কোটি টাকা কমিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭১ কোটি ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ হাজার ৪২১ কোটি টাকা।

২০২০-২১ অর্থবছরে এ মন্ত্রণালয়ের জন্য অর্থায়ন আরও কমে বরাদ্দ দাঁড়ায় ১ হাজার ২৪৬ কোটি টাকায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে সেটি আরও কমে হয় ১ হাজার ২২১ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়ে হয় ১ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। সবশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকায়। সে হিসাবে আট বছর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ মন্ত্রণালয় যে অর্থ বরাদ্দ পেয়েছিল, পরের অর্থবছরগুলোতে সেই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল তার চেয়েও কম।

উন্নত দেশগুলোর অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের কারণে বাড়ছে তাপমাত্রা। প্রতিকূল এ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হাঁসফাঁস উঠছে জনজীবনে। অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ায় প্রকট হচ্ছে পরিবেশগত হুমকি

সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। বছর বছর এসব আকস্মিক দুর্যোগে দেশের মানুষ দীর্ঘ ক্ষতির মুখে পড়লেও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নেই যথাযথ কর্মপরিকল্পনা। রাষ্ট্র এ খাতে পর্যাপ্ত অর্থ ব্যয়ও করছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে হারে জাতীয় বাজেটের আকার বাড়ছে সে হারে জলবায়ু ও দুর্যোগ প্রশমন খাতে বরাদ্দ বাড়ছে না। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিনিয়ত আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বাংলাদেশ। অথচ প্রয়োজনের তুলনায় এ মন্ত্রণালয় বাজেটে বরাদ্দ পাচ্ছে কম।

দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি বাড়লেও বাজেটে বরাদ্দ বাড়ে না

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় শুধু পরিবেশ মন্ত্রণালয়ই নয়, বরাদ্দ বাড়াতে হবে পানি সম্পদ, এলজিইডি ও স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোতে। কিন্তু সেসব মন্ত্রণালয়েও উল্লেখযোগ্য হারে বরাদ্দ বাড়ছে না। যেটুকু বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করা হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাড়ছে দুর্যোগ

সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় রিমালে উপকূলীয় এলাকার ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে, আর আংশিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার ঘরবাড়ি। এছাড়া রিমালের প্রভাবে ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ২০ জেলায় ৬ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। আম্ফানের তাণ্ডবে মারা যান ১৬ জন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ, রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্টসহ অবকাঠামোর পাশাপাশি ঘরবাড়ি, কৃষি এবং চিংড়ি ঘেরসহ মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এই যে হিট ওয়েভ চালু হয়েছে এটি অব্যাহত থাকবে এবং মাত্রাও বাড়বে। এজন্য জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সরকারি-বেসরকারিভাবে আমাদের প্রচুর অর্থ প্রয়োজন।- মো. লিয়াকত আলী

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) ঘূর্ণিঝড় বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে ১৬ জনের প্রাণহানি ও ৪০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২০১৭ সালে ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে শিশুসহ অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে ১৮ জনের প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২০২১ সালের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ৯ জনের মৃত্যু এবং ক্ষতিগ্রস্ত হন ৯৫ হাজার মানুষ। ২০২৩ সালে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ঘূর্ণিঝড় মোখা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ রিমালের তাণ্ডবে দেশের ১৯ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের অনুকূলে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমের জন্য ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, ৫ হাজার ৫০০ টন চাল, ৯ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন, শিশুখাদ্য কিনতে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ও গোখাদ্যের জন্য ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ ও উন্নয়ন সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসাইন খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজেটে আমাদের জলবায়ু খাতের বরাদ্দ পরিকল্পনা মাফিক ও পর্যাপ্ত হচ্ছে না। আগামী পাঁচ বছরে কোথায় কোথায় ঝুঁকি বাড়বে, সে অনুযায়ী অ্যাসেসমেন্ট করে বাজেট হওয়া উচিত। যেমন- আমরা কিন্তু জানতাম ঘূর্ণিঝড়গুলো আসবে। সে অনুযায়ী পর্যাপ্ত বাজেট এ খাতে রাখিনি। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত বাজেট তৈরি করতে হবে। তবে সরকারের নীতি-নির্ধারকরা এগুলো কতটা বিবেচনায় রাখছেন সেটিই বিষয়।

পরিবেশবাদী সংগঠন ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের বাজেটের আকার বাড়ছে, উন্নয়ন হচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে। আবার এসব উন্নয়নের কারণে মানুষের, জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থানের ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশের বাজেট সক্ষমতা বাড়ছে না। পরিবেশ ও জলবায়ুর জন্য যে বাজেট দেওয়া হচ্ছে সেটা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

‘এতে বোঝা যায় রাষ্ট্রের কাছে পরিবেশ ও মানুষের জীবন-জীবিকা খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। পরিবেশের বিরূপ প্রভাবে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে এর দায় কিন্তু পরিবেশ মন্ত্রণালয় তথা সরকারকেই নিতে হবে। উন্নত বিশ্বের অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের কারণে আমাদের যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি হচ্ছে আমরা তা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক তহবিল আনতে পারছি না। দুর্নীতি ও যথাযথ পরিকল্পনার প্রভাবে আন্তর্জাতিক বরাদ্দও ঠিকভাবে পাচ্ছে না বাংলাদেশ’- বলেন শরীফ জামিল।

দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি বাড়লেও বাজেটে বরাদ্দ বাড়ে না

ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় সাময়িক এসব সহায়তা অনেকটাই অপ্রতুল মনে করেন বিশ্লেষকরা। উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র জাগো নিউজকে বলেন, এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব হারিয়ে শূন্য থেকে ঘুরে দাঁড়ানো উপকূলের লাখ লাখ মানুষের জন্য অনেকটা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। এসব ক্ষতি মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর ভয়ংকর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে উপকূল বা হাওর এলাকায় টেকসই বাঁধ নির্মাণে জোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ এম জাকির হোসেন খান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ছে। ফলে এসব ক্ষেত্রে শুধু পরিবেশ নয়, দুর্যোগ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কেও গুরুত্ব দিতে হবে।

‘বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে আমি মনে করি এলজিইডি মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ বেশি থাকা প্রয়োজন। কারণ, এ মন্ত্রণালয়ই স্থানীয় পর্যায়ের কাজগুলো করে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কেও গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে নদীর বাঁধ ও নদীরক্ষা করা যাবে না। তখন বন্যা আরও ভয়াবহ রূপ নেবে। পাশাপাশি নদীদূষণ রোধ করতে হবে। কিন্তু পানি সম্পদেও বরাদ্দ কমছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়েও বাজেট বরাদ্দ তুলনামূলকভাবে এখনো কম। এছাড়া গবেষণা খাতেও বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।’

অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া দরকার উল্লেখ করে জাকির হোসেন খান বলেন, ‘আমাদের সবুজবান্ধব বাজেটের জন্য একটা পলিসি থাকতে হবে। এটা শুধু পরিবেশ নয়, অর্থ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব। জলবায়ু বাজেটটা একটা সমন্বিত বাজেট হওয়া উচিত, প্রতিটি সেক্টরে এটার প্রভাব থাকবে। যেমন- এলজিইডি যে ব্যয়টা করবে সেটা জলবায়ুবান্ধব কি না সেটারও একটা ট্যাগিং থাকা দরকার।’

‘আমাদের সম্পদ সীমিত। আমাদের ক্ষয়ক্ষতিও বাড়ছে। বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। শুধু অর্থ দিয়েই নয়, ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্যোগ সহনীয় ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দিতে হবে’- যোগ করেন তিনি।

দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি বাড়লেও বাজেটে বরাদ্দ বাড়ে না

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাজেট দরকার বলেও মনে করছেন পরিবেশবিদরা। তারা মনে করেন, সুন্দরবনসহ সারাদেশে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মনোযোগী হওয়া উচিত। দুর্যোগ এলে প্রাণিকুল গাছে আশ্রয় নিতে পারে না। রিমালের প্রভাবে এবার প্রায় ১২৬টি হরিণসহ অনেক প্রাণী মারা গেছে। অনেক প্রাণী জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। এই প্রাণিসম্পদের সুরক্ষায় কেল্লা করা উচিত। ট্যুরিস্ট পুলিশের মতো পরিবেশ অধিদপ্তরও যেন বিভিন্ন দূষণ রোধ ও পরিবেশ রক্ষায় রিয়েল টাইম এনফোর্স করতে পারে সে অনুযায়ী বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রোগ্রামের পরিচালক মো. লিয়াকত আলী জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বাজেট অনেক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে হয়। এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে ক্লাইমেট ইস্যুটি নেই। ক্লাইমেট ইস্যু বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বা পরিকল্পনা করা হলে সেটি টেকসই হবে না। এ খাতগুলোতে বরাদ্দ যে কম দেওয়া হচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

‘উপকূলের মানুষদের সুপেয় পানি দিতে পারি না, তাদের কৃষিকাজ ব্যাহত হয়, বাধ্য হয়ে তারা ঢাকায় স্থানান্তর হয়ে বস্তিতে মানবেতর জীবনযাপন করে। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে এমন হয়ে আসছে। এই যে হিট ওয়েভ চালু হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকবে এবং মাত্রাও বাড়বে। এজন্য জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সরকারি-বেসরকারিভাবে আমাদের প্রচুর অর্থ প্রয়োজন’- যোগ করেন তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, এ মন্ত্রণালয়ে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় সেটিও কয়েক ভাগ হয়ে যায়। বন বিভাগের জন্য পৃথক বরাদ্দ থাকে। জলবায়ু অভিযোজনের যে খরচ, সেটির একটি অংশ কিন্তু পানি, কৃষি, স্থানীয় সরকার ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় খরচ করে। যে কারণে বাজেটে অন্য সব মন্ত্রণালয়ের একটা পার্সেন্টেজ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে খরচ হচ্ছে বলে দেখানো হয়।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের যুগ্ম সচিব রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে, সেক্ষেত্রে বাজেটে বরাদ্দ বাড়লে জলবায়ু পরিবর্তনের উৎসগুলোও বন্ধ করা যাবে। একই সঙ্গে অভিযোজন কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।

সর্বশেষ - সারাদেশ