শনিবার , ৭ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

জয়পুরহাট জেলার ইটভাটা ৪৮টির মধ্যে ৪৩টিই অবৈধ

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
জানুয়ারি ৭, ২০২৩ ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ

জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ব্যবসা-বাণিজ্য শাখায় খোঁজ নিয়ে এ জেলায় কতগুলো ইটভাটা রয়েছে, তার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে জয়পুরহাট পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের ইটভাটার হালনাগাদ তালিকায় দেখা গেছে, জেলায় ৪৮টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র রয়েছে। ছাড়পত্র না থাকা ইটভাটাগুলোর উৎপাদন চালিয়ে যাওয়া গ্রহণযোগ্য নয় বলে হালনাগাদ তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। এসব অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের জয়পুরহাট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন।

২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৪ ধারায় বলা আছে, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত, সেই জেলার জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া কোনো ব্যক্তি ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত করতে পারবে না। ওই আইনের ৮(১) ধারায় বলা আছে, ছাড়পত্র থাকুক বা না থাকুক, আইন কার্যকরের পর আবাসিক, বাণিজ্যিক ও সংরক্ষিত এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর, সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান, জলাভূমি, কৃষিজমি এবং বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ভাটা স্থাপন করা যাবে না।

জেলার ইটভাটাগুলো ঘুরে সিংহভাগ ভাটায় আইনের ব্যত্যয় লক্ষ করা গেছে। অধিকাংশ ইটভাটা ফসলি মাঠে স্থাপন করা হয়েছে। এসব ইটভাটা থেকে বসতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দূরত্ব খুবই কম।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বড় তাজপুর গ্রামে এইচ ব্রিকস ভাটার পাশেই ফসলি জমি। ৫-৬ গজ দূরে বড় তাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাঁচবিবি উপজেলার ভীমপুর মেসার্স লিটন ব্রিকস ভাটা ৩০০ গজ দূরে রেললাইন ও ৬০০ গজ দূরে লোকালয়। জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভারুরিয়া গ্রামে মেসার্স ভাই-ভাই ব্রিকস ভাটার কাছেই আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাঁচবিবির উত্তর কৃষ্ণপুর গ্রামে মেসার্স বেলী ব্রিকস ভাটার ২০০ মিটার দূরে রেললাইন ও ৪০০ মিটার দূরে জনবসতি। সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্যের সত্যতা মিলেছে।

বড় তাজপুর গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, ইটভাটার ধুলাবালিতে তাঁদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। ভীমপুর এলাকার বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, রাস্তা ও বসতবাড়ির আশপাশে ইটভাটার ধুলাবালি ওড়ে। এতে সমস্যা হয়। ফলের গাছের ফলন কমছে। ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে জানিয়ে লাভ হয় না। উল্টো ইটভাটার মালিক জানতে পারলে তাঁদের সঙ্গে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এ কারণে ইটভাটার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চায় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইটভাটার মালিক বলেন, তাঁরা তো বৈধভাবে ইটভাটা চালাতে চান। কিন্তু অবৈধ ইটভাটা থাকলে প্রশাসনের লাভ হয়। কীভাবে লাভ হয়, তা তিনি জানাননি।

জয়পুরহাট জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ ইটভাটার ২০১৫ সালের পর থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স নবায়ন করা যায়নি। এ কারণে এখন বেশির ভাগ ইটভাটা অবৈধ। তবে ইটভাটাগুলোর মালিকেরা নিয়মিত প্রতিবছর আয়কর ও ভ্যাট দিচ্ছেন।’

অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কেন অভিযান হচ্ছে না, জানতে চাইলে জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, তিনি এখানে নতুন যোগদান করেছেন। ইটভাটাগুলোর বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

সর্বশেষ - সারাদেশ