রবিবার , ২৩ এপ্রিল ২০২৩ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

পর্ব-২ ‘ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আমরা চাচ্ছি না, ম্যাজিস্ট্রেটই দেওয়া হোক’

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
এপ্রিল ২৩, ২০২৩ ৩:২৪ অপরাহ্ণ

চলতি বছরের শুরু থেকেই ঘটছে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। সম্প্রতি বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড স্মরণকালের ভয়াবহতম। নিউ সুপার মার্কেটেও ঘটেছে বড়সড় অগ্নিকাণ্ড। এসব ঘটনাকালে চলছে তীব্র দাবদাহ। সব মিলিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়তই কাজ করতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের। সার্বিক বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক রাসেল মাহমুদ। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ থাকছে শেষ পর্ব

জাগো নিউজ: ২০১৮ সালে রাজধানীতে ভবন-মার্কেটের অগ্নিঝুঁকি নিয়ে সার্ভে করা হয়। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো সার্ভে কেন করা হয়নি?

 আমাদের আইন অনুযায়ী আমরা আসলে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করতে পারি। জনগণকে সচেতন করার জন্য ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট টাঙাতে পারি। এরপরে যে শাস্তি কী হবে সেটা কোথাও বলা নেই।

মাইন উদ্দিন: আমাদের জনবল স্বল্পতা আছে। সারা দেশে সার্ভে যারা করে তাদের আমরা ওয়্যার হাউজিং ইন্সপেক্টর বলি। সারা দেশে আমাদের ওয়্যার হাউজিং ইন্সপেক্টর আছে ২৬৮ জন। ২৬৮ জন দিয়ে বাংলাদেশ অথবা ঢাকা কতটুকু সম্ভব! এরাই বিভাগীয় অনাপত্তি সনদ (এনওসি) দেয়, তদারকি, সার্ভে করে আবার পরামর্শ দেয়। অনেক কিছুরই সাধ আছে, সাধ্যের টানাটানিও আছে।

জাগো নিউজ: ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বা না নিতে পারার প্রতিবন্ধকতা কী?

মাইন উদ্দিন: আমাদের আইন অনুযায়ী আমরা আসলে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করতে পারি। জনগণকে সচেতন করার জন্য ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট টাঙাতে পারি। এরপরে যে শাস্তি কী হবে সেটা কোথাও বলা নেই। যদি কেউ বিভাগীয় অনাপত্তি সনদ (এনওসি) না নেয় তার বিরুদ্ধে মামলা করে তিন বছরের জেল জরিমানার কথা বলা আছে। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরের কাজটি রাজউক, সিটি করপোরেশন কিংবা স্থানীয় সরকার, পৌরসভার। আমরা যখন ঝুঁকিপূর্ণ বলে দেবো তারপর হলো ওনাদের কাজ।

জাগো নিউজ: ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও কাজ না হওয়ায় পরবর্তী কাজের জন্য ফায়ার সার্ভিসের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন কি না?

মাইন উদ্দিন: অবশ্যই। আমাদের ক্ষমতা দেওয়া উচিত। তুরস্ক থেকে যে টিমটা এসেছিল তখন আমরা বলেছিলাম, আমরা মোবাইল কোর্ট চালাবো। কিন্তু এটা চালানোর জন্য আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন। সঙ্গে পুলিশ প্রয়োজন। পুলিশ হয়তো আসবে কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে লিখেছি। এখনো তার কোনো উত্তর পাইনি। আইনটা প্রয়োগ করতে হলে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা লাগবে। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আমরা চাচ্ছি না, আমরা চাচ্ছি ম্যাজিস্ট্রেটই আমাদের দেওয়া হোক। পোস্টিং দিলে আমরা এই জিনিসগুলো করতে পারবো।

জাগো নিউজ: আগুন নেভাতে গিয়ে কী ধরনের সমস্যায় পড়েন আপনারা?

মাইন উদ্দিন: মূল সমস্যা যেটা হয়, এক হলো পানি আরেকটি উৎসুক জনতা। একটা পাম্প ও হোস্ট পাইপ লাগিয়েছি, যা দিয়ে পানি দিচ্ছি। উৎসুক জনতা সেখান দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে দেখা গেলো পাইপটা ছুটিয়ে দিলো। এতে আগুনটা নেভাতে দেখা যায় আরও পাঁচ মিনিট বেশি সময় লেগে গেলো। নিউমার্কেটে আরও বিশাল ঘটনা ঘটতে পারতো। পুরো নিউমার্কেট সংযুক্ত ছিল, তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত ইউনিট নিয়ে আমরা সেখানে কাজ করেছি। নিউমার্কেটে আমার দেখা ফায়ার ফাইটিংয়ের পেশাগত দক্ষতার সফল একটি অভিযান। আমি শুনেছি এক হাজার ২০০টি দোকানের অনুমতি ছিল, সেখানে তিন হাজার ৬০০টি দোকান ছিল।

জাগো নিউজ: ফায়ারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বঙ্গবাজারের ঘটনায়ও আমরা দেখেছি রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ স্টেশন থেকে ইউনিট এসেছে। তারপরেও বঙ্গবাজার পুড়ে পুরোপুরি ছাই হয়েছে। আপনি কী বলবেন?

মাইন উদ্দিন: ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো কারণ নেই। আগুন কত দ্রুত নেভাবো এবং নেভাতে পারবো সেটা নির্ভর করে আগুনটা কত বড় কিংবা ছোট তার ওপর। যে আগুনটা জ্বলছে সেটা আসলে কীসে জ্বলছে।

জাগো নিউজ: গার্মেন্টস ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রেই আগুনের সচেতনতা একেবারেই কম। কারণটা আসলে কী?

মাইন উদ্দিন: গার্মেন্টসে বায়াররা আসে না যদি ফায়ার ব্যবস্থা ও সচেতনতা না থাকে। তাই গার্মেন্টসকর্মীরা প্রশিক্ষিত। গার্মেন্টসের মতো অন্য জায়গায় মানুষ সাবধান নয়। ১০০ টাকায় দুই টাকা খরচ করলেই অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের চাহিদা মেটানো যায়, কিন্তু সেটা কেউ করছে না।

জাগো নিউজ: আপনিই রাজধানীর আবাসিক ভবনসহ সব ধরনের ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা রয়েছে কি না তার অভিযানের কথা বলেছিলেন। প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও তা শুরু করতে পারেননি কেন?

 আইনটা প্রয়োগ করতে হলে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা লাগবে। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আমরা চাচ্ছি না, আমরা চাচ্ছি ম্যাজিস্ট্রেটই আমাদের দেওয়া হোক। পোস্টিং দিলে আমরা এই জিনিসগুলো করতে পারবো।

মাইন উদ্দিন: আমরা মন্ত্রণালয়ে লিখেছিলাম অনুমোদনের জন্য। আমরা এখনো মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাইনি। আমি তো কোনো না কোনো মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করি।

জাগো নিউজ: রাজধানীতে ভবন-মার্কেটের অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন, রাজউক- এই তিনটির সমন্বয়হীনতাকেই বিশেষজ্ঞরা দায়ী করেন। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?

মাইন উদ্দিন: ঈদের ছুটির আগেই রাজউকের সঙ্গে বসার কথা ছিল। কিন্তু রাজউকের যিনি প্রধান তিনি অসুস্থ থাকায় বসা হয়নি। ঈদের পরে প্রথম সপ্তাহেই বসবো। আমাদের প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ঘটনায় কাজ করতে হচ্ছে। বাকিরা কী করছে তা আমার বলার বিষয় নয়।

জাগো নিউজ: আমরা দেখেছি সিদ্দিকবাজার, সায়েন্সল্যাবসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে আতঙ্ক নিয়েই এখন মানুষ চলাচল করে। আমরা আসলে কোন অবস্থায় আছি?

মাইন উদ্দিন: এটা আমি বলবো না। আমি শুধু বলবো যে আমরা যদি সচেতন হই, নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো পালন করি, ইলেকট্রিক সার্কিট ও অন্য জিনিসগুলো কিছুদিন পর পর চেক করি তাহলে নিরাপদ থাকবো।

জাগো নিউজ: আপনাকে ধন্যবাদ।

মাইন উদ্দিন: আপনাকে এবং জাগো নিউজ পরিবারকেও ধন্যবাদ।

সর্বশেষ - সারাদেশ