সোমবার , ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উপ-সম্পাদকীয়
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাপন
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশগ্রাম
  13. দেশজুড়ে
  14. ধর্ম
  15. নারী ও শিশু

কষ্ট ভুলে উল্লাসে মাতলেন আর্জেন্টিনার লাখো মানুষ

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
ডিসেম্বর ১৯, ২০২২ ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

আতশবাজির ঝলকানি, গাড়ির হর্নের শব্দ বাজিয়ে সমর্থকেরা উল্লাস করেছেন। তাঁদের গায়ে জড়ানো ছিল নীল-সাদা রঙের পতাকা। গান গেয়ে, নেচে নেচে এবং পতাকা উড়িয়ে বিজয় উদ্‌যাপন করেছেন তাঁরা।

প্রায় দুই লাখ মানুষ বুয়েনস এইরেসের ওবেলিস্ক স্তম্ভ এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন। প্লাজা দে মায়ো স্কয়ারে এ স্মৃতিস্তম্ভের অবস্থান। প্লাজা দে মায়ো স্কয়ারে উপস্থিত ছিলেন ৫০ বছর বয়সী হোটেল অভ্যর্থনাকারী জুলিও বেরদুন। তিনি বলেন, এসব মানুষের প্রত্যেকের কাছে বিষয়টি আনন্দের। আজ আমাদের দিন, আনন্দটাও আমাদের।’

জোয়েল সিয়ারালো নামের ৩১ বছর বয়সী এক তরুণ আনন্দে আত্মহারা হয়ে বারবার বলছিলেন, ‘আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না।’

বুয়েনস এইরেসের সেন্তেনারিও পার্কে বিশাল পর্দায় খেলা দেখছিলেন বিয়ার বিক্রেতা ম্যানুয়েল ইরাজো। তিনি বলেন, ‘আমরা আর্জেন্টাইনদের জন্মই হয়েছে দুর্ভোগ পোহানোর জন্য। এরপরও আমরা পথ চলছি। এটাই এ দেশের ধরন।’

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্জেন্টিনায় সাড়ে চার কোটি মানুষের বসবাস। এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষই দরিদ্র। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে সঞ্চয় ও মোট আয়ের ওপর প্রভাব পড়ছে। বছরের পর বছর ধরে আর্জেন্টিনা অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে আছে। দেশটির জনগণের অনেকে বিশ্বকাপ জয়ে স্বপ্ন দেখতে দেখতে এ দুর্দশা ভুলে থাকার চেষ্টা করে থাকে।

২৫ বছর বয়সী নির্মাণশ্রমিক আগুস্তিন আচেভেদো বলেন, আর্জেন্টিনা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে সমস্যার মধ্যে আছে। খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এই বিজয়ে এখান থেকে মনোযোগ সরানোর ক্ষেত্রটি ভালোভাবে অর্জিত হয়েছে।’

রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে ওবেলিস্ক চত্বরে আলো জ্বালানো হয়। শুধু স্কয়ারের কেন্দ্রস্থলেই নয়, আশপাশের রাস্তার আনাচকানাচে যত দূর চোখ যাচ্ছিল, শুধু মানুষ আর মানুষ, উল্লাস ও আনন্দ।

বুয়েনস এইরেসে লা মোস্কা ব্যান্ডের পক্ষ থেকে একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল। এখানে বিশ্বকাপ উপলক্ষে আর্জেন্টিনা দলের অফিশিয়াল গানের সংস্করণটি পরিবেশন করা হয়।

আর্জেন্টিনা সবশেষ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ৩৬ বছর আগে। গতকাল রোববারের এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে ৩৬ বছরের শূন্যতা পূরণ হওয়ায় অনেকে স্বস্তি বোধ করছেন।

সোলেদাদ পালাসিয়োস বলেন, ‘৩৫ বছরের জীবনে এ মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছি। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। এ স্বপ্ন পূরণের জন্য ৩৫ বছর ধরে অপেক্ষা। বিশ্বকাপ উপভোগ করব বলে জীবনভর অপেক্ষা করছি।’

মেসি এবং দি মারিয়ার জন্মশহর রোজারিওতে প্রতিদ্বন্দ্বী দল নেওয়েলস ওল্ড বয়েজ ও রোজারিও সেন্ট্রালের ভক্তরা বিভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলা দেখেছেন। ২১ বছর বয়সী তরুণ নাহুয়েল কান্তেরো বলেন, ‘জাতীয় এ দল সবাইকে একত্র করেছে। আপনারা দেখেছেন সেন্ট্রাল এবং নেওয়েলসের সমর্থকেরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন, গান গাইছেন। এটি এখানকার সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য।’

২৩ বছর বয়সী তরুণ মার্টিন রেইনা বলেন, ‘এ দল সবকিছুর যোগ্যতা রাখে। অন্য যে কারও চেয়ে মেসির জন্য এটি অনেক আনন্দের। কারণ তিনি কখনো হাল ছেড়ে দেননি এবং প্রচণ্ড রকমে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।’

আজ সোমবার নিজেদের দেশের উদ্দেশে রওনা করবে আর্জেন্টিনা দল। স্থানীয় মানুষের এখন একটাই চাওয়া, কাল মঙ্গলবার তাদের ছাদখোলা বাসে করে সংবর্ধনা দেওয়া হোক।

২০ বছর বয়সী তরুণ মিকায়েলা লোর্দেস তাঁর মাকে নিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘মেসি এবং দি মারিয়া যদি রোজারিওতে বিজয় উদ্‌যাপন করতে আসেন, তবে আমরা পুলকিত বোধ করব।’

সর্বশেষ - সারাদেশ